চিকিৎসকের দৃষ্টিতে সিগারেট ছাড়ার ৭টি সহজ টিপস

সিগারেট খাওয়া যতটা সহজ, ছাড়া ঠিক ততটাই কঠিন। হয়তো প্রতিদিনই সিগারেট ছাড়ার প্রতিজ্ঞা করছেন, কিন্তু আবার প্রতিজ্ঞা ভঙ্গও করছেন। এই মরণ নেশার প্রতি প্রবল আকর্ষণ প্রতিনিয়ত মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। ধূমপানের ফলে ক্যান্সার, হৃদরোগের আশঙ্কাসহ বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এসব কথা জেনেও অনেকে ধূমপান ত্যাগ করতে ব্যর্থ হন। কিন্তু অনেক সময় স্বাস্থ্য সচেতন হয়েও, ধূমপান ত্যাগ করবেন ভেবেও সেটা শেষ পর্যন্ত করে উঠতে পারেন না। যাঁরা ধূমপানে আসক্ত, তাঁদের জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া যেমন কঠিন, তার চেয়েও কঠিন হলো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা। তবু ধূমপান ছাড়া কঠিন। তারপরেও যারা ছেড়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন তাদের জন্য কিছু পরামর্শ।  

মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করুন; হঠাৎ করে একবারে ছাড়ার চেষ্টা করবেন না। শরীর নিকোটিনে অভ্যস্ত থাকার ফলে একটু সময় লাগে এই অভ্যাস মুক্ত হতে। অনেকে মানসিক চাপের ফলে ধূমপান করেন। তাই মানসিক চাপমুক্ত থাকার চেষ্টা করুন। যখনই সিগারেট খেতে ইচ্ছা হবে তখনই নোনতা কিছু খেয়ে নিন। নোনতা চিপস, বিস্কিট বা জিভে সামান্য লবণ লাগিয়ে নিলেও সিগারেট খাওয়ার ইচ্ছা চলে যাবে। যোগ ব্যয়ামও করতে পারেন। এগুলো আপনাকে চাপমুক্ত করে ধূমপান নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে।

নিজের ব্যস্ততা বাড়ান; দিনের কোন সময়গুলোতে আপনার ধূমপানের ইচ্ছা বেশি জাগে, সেটি শনাক্ত করুন। এরপর ওই সময়গুলোতে নিজেকে কোনো কাজের মধ্যে ব্যস্ত রাখুন। শারীরিক কাজ আপনাকে ধূমপান ত্যাগ করতে সাহায্য করবে। যখন ধূমপান করতে ইচ্ছা কতাই নিজের সংকল্পে অটুট থাকতে আপনার ধূমপান ছাড়ার কারণ অনেক সাহায্য করবে। রবে হাঁটা শুরু করুন বা জগিং করতে পারেন। 

ঘর পরিষ্কার রাখুন; শুনতে বেশ মজার মনে হচ্ছে? চেষ্টা করে দেখুন, নিজের হাতে ঘর পরিষ্কার করুন দেখবেন সিগারেট পানের নেশা অতটা চাপছে না। আপনি নিজে পরিচ্ছন্ন ও ঘরবাড়ি পরিষ্কার রাখুন। ঘরের কোনায় বা নিজের পোশাকের কোথাও সিগারেটের গন্ধ পেলে আবার ধূমপানের ইচ্ছা জাগতে পারে। এরপর ঘরে সুন্দর গন্ধের এয়ার ফ্রেশনার ব্যবহার করুন। এই গন্ধ আপনাকে সিগারেটের ধোঁয়ার কথা ভুলে যেতে সাহায্য করবে। তাই সব পরিস্কার করে সাবান পানিতে ধুয়ে নিলেই হয়।

খাবারের পরিবর্তন;  আমেরিকান একটি গবেষণা বলছে, অনেকের কাছে মাংসজাতীয় খাবার খাওয়ার পর ধূমপান উপভোগ্য হয়ে ওঠে। অন্যদিকে ফল কিংবা সবজিজাতীয় খাবারের পর ধূমপান কিছুটা স্বাদ হারায়। আঙুরের রস আমাদের শরীরের ভিতর জমতে থাকা সমস্ত টক্সিক জিনিস বের করে দেয়।  ধূমপান ছাড়তে চাইলে এক গ্লাস জলে লঙ্কার গুঁড়ো মিশিয়ে সেই জল পান করুন। শাকসবজি এবং ফল খাওয়ার পরিমাণ বাড়িয়ে দিন। ধূমপানের সময় আপনার ডায়েট চললে সেটি এড়িয়ে চলুন কিছুদিনের জন্য। এটা করলে আপনার ফুসফুসের ক্ষমতা বাড়বে। আদার সাহায্য নিতে পারেন ধূমপান ছাড়তে চাইলে। এতে এমন বেশ কিছু উপাদান আছে যা ধূমপান করার ইচ্ছেটাকে একদম কমিয়ে দেয়। 

পরিবারে সময় দিন; ধূমপান ছেড়েছেন, এমন কাউকে চেনা থাকলে তাঁর কাছ থেকে পরামর্শ নিন। তাঁর অভিজ্ঞতাগুলোকে কাজে লাগান। আপনি ধূমপান বন্ধ করতে চাইছেন বিষয়টি বন্ধুবান্ধব,পরিবারের সদস্য এবং অফিসের সহকর্মীদের জানান। তাদের বলুন আপনাকে উৎসাহিত করতে। অন্তত ধূমপান ছাড়ার পর প্রথম কয়েক দিন ধূমপায়ী বন্ধুদের সঙ্গে সরাসরি আড্ডা থেকে বিরত থাকুন। একই সঙ্গে অধূমপায়ী বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানোর চেষ্টা করুন।

চিকিৎসকের পরামর্শ নিন;  নিরুপায় হলে সর্বশেষ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে কাউন্সেলিং-এর সহায়তা নিতে পারেন। অন্তত ধূমপান ছাড়ার পর প্রথম কয়েক দিন ধূমপায়ী বন্ধুদের সঙ্গে সরাসরি আড্ডা থেকে বিরত থাকুন। একই সঙ্গে অধূমপায়ী বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানোর চেষ্টা করুন। কোনটা আপনার জন্য উপযুক্ত এবং নিকটবর্তী বাজারে পাওয়া যায় তা জানতে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া নিয়ে সংকোচ বা হীনম্মন্যতায় ভোগার কোনো কারণ নেই। বরং আপনার এই পদক্ষেপের মাধ্যমেই আপনি নিজেকে ধূমপানের আসক্তি থেকে সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনে নিয়ে আসতে পারবেন।

আজকের এই পোস্টে আমি আপনাদের সাথে ধূমপান ছাড়ার উপায়  জানাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আশা করছি আজকের আর্টিকেলে সে সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দিতে পেরেছি। এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকলে তা কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আপনি কি ছাড়া জীবন মূল্যহীন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন আমাদের এই পৌষ্টের মাধ্যমে…..

Leave a Comment