নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়মাবলী এবং নতুন ভোটারের করণীয় 

আমাদের মধ্যে এখন ও যারা সময় মত নতুন ভোটার নিবন্ধন করতে পারেননি। আমরা অনেকে জানি না নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম কি এবং নতুন ভোটার হতে প্রয়োজনীয় কাগজ গুলো কি?আমরা যদিও নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম খুবই সহজ তবুও আমরা  অনেকেই সঠিকভাবে আবেদন করতে পারি না আার এ কারণে ভোগান্তিতে পড়ি।আমি আপনাদের জানতে চাই নতুন ভোটার হওয়ার নিয়ম কি?

নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার আবেদন পদ্ধতি:-

১। অনলাইনে নতুন ভোটার হওয়ার ।

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট www.services.nidw.gov.bd আবেদন করতে হবে। নতুন ভোটার নিবন্ধন ফরম ডাউনলোড হয় সেটি প্রিন্ট করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আবেদনের সাথে  সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন অফিসে জমা দিতে হবে। উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও রেজিস্ট্রেশন অফিসার আপনার আবেদন ও সকল কাগজপত্র যাচাই করে সকল তথ্য সঠিক পাওয়ার পর নতুন ভোটারের অনুমোদন দেবেন।

২। আপনার উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে 

উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে নতুন ভোটার নিবন্ধন ফরম সংগ্রহ করতে হবে। ভোটার নিবন্ধন ফরমটি পূরণ করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ফরমের সাথে  করে অফিসে জমা দিতে হবে। প্রতিটি ২ নং নতুন ভোটার নিবন্ধন ফরমে একটি করে ইউনিক নম্বর থাকে যার মাধ্যমে আবেদনকারীর তথ্যাদি যাচাই করা যায়।আপনি আবেদন করার পর উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও রেজিস্ট্রেশন অফিসার আপনার আবেদনটি যাচাই করে সকল তথ্য ও কাগজপত্র সঠিক পেলে নতুন ভোটার করার অনুমোদন দেবেন।

নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে:-

  • এসএসসি সনদ – (বয়স প্রমানের সনদ)
  • জন্ম নিবন্ধন – (বয়স প্রমানের সনদ)
  • পাসপোর্ট / ড্রাইভিং লাইসেন্স / টি.আই.এন – (বয়স প্রমানের সনদ)
  • ইউটিলিটি বিলের কপি/বাড়ী ভাড়ার রশিদ/হোল্ডিং ট্যাক্স রশিদ
  • নাগরিকত্বের সনদ (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
  • বাবা, মা, স্বামী/স্ত্রীর আই.ডি কার্ডের কপি (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)

অনলাইননতুন ভোটার নিবন্ধন  করার পদ্ধতি:-

অনলাইনে নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার করার জন্য services.nidw.gov.bd এই ওয়েবসাইট থেকে নতুন নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে হবে। আপনার সকল ব্যক্তিগত তথ্য দিয়ে অনলাইনে আবেদন করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আপনার উপজেলা অফিসে জমা দিন। আপনার সকল তথ্য যাচাইয়ের পর বায়োমেট্রিক তথ্য নেয়ার পরই ভোটার আইডি তৈরি হবে। অনলাইনে নতুন ভোটার আইডি এ একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করুন; ব্যক্তিগত তথ্য প্রদান করুন; অনলাইন আবেদন জমা করুন; আবেদন ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করুন; বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদান করুন; জাতীয় পরিচয়পত্র ডাউনলোড/ সংগ্রহ করুন।

 

ধাপ ১- অনলাইনে নতুন ভোটার আইডি কার্ডের জন্য আবেদন আপনি মোবাইল বা কম্পিউটার থেকে ইন্টারনেট ব্রাউজারের মাধ্যমে NID অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন ওয়েবসাইট থেকে অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

অনলাইনে আবেদন করার সুবিধা হচ্ছে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য ভুল হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে কারণ এখানে আপনি নিজের তথ্য নিজে দেখে শুনে প্রদান করছেন। এবং আপনার দেয়া তথ্যই জাতীয় পরিচয়পত্রে প্রিন্ট হবে। অনলাইনে নতুন জাতীয় পরিচয়পত্রের নিবন্ধনের জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন। 

১. একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন

প্রথেমেই এই লিংকে বাংলাদেশ অনলাইনে নতুন ভোটার আইডি কার্ড এ আপনার একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। আবেদন করুন বাটনে ক্লিক করুন। এখানে আপনার নাম, জন্মতারিখ ও ক্যাপচা কোডটি লিখে বহাল বা সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন। তারপর আপনার মোবাইল ভেরিফিকেশনের জন্য মোবাইল নম্বর দিতে হবে। অবশ্যই আপনার সচল এবং এই মহুর্তে আপনার কাছে আছে এমন মোবাইল নম্বরটি দিবেন। অবশ্যই আপনার বা যার আবেদন করছেন তার নিজের মোবাইল নম্বর দিতে হবে। কারণ ভবিষ্যতে লগইন করার জন্য বা পাসওয়ার্ড পরিবর্তনের জন্য নম্বরটি প্রয়োজন হবে।আপনার মোবাইলে আসা ৬ ডিজিটের ভেরিফিকেশন পিন কোডটি লিখুন এবং বহাল বাটনে ক্লিক করে পরবর্তী ধাপে যান।এখানে আপনাকে একটি ইউনিক ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড সেট করতে হবে। যাতে ভবিষ্যতে এই ইউজার ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগ ইন করে, জাতীয় পরিচয়পত্র ডাউনলোড, সংশোধনের আবেদন ও অন্যান্য সেবা নিতে পারবেন। ইউজারনেম ইংরেজি নাম ও সংখ্যার মিশ্রনে দিবেন এবং পাসওয়ার্ড কমপক্ষে ৮ ডিজিটের হতে হবে। যদি ইউজারনেম ইতোমধ্যে ব্যবহৃত হয়েছে এমন সমস্যা দেখায়, ইউজারনেম পরিবর্তন করে পুনরায় চেষ্টা করুন। মনে রাখবেন, আপনার ইউজারনেম অন্য কারে সাথে যেন না মিলে। তাই মাথা খাটিয়ে এটা লিখুন যেন ইউনিক হয়।

২. ব্যক্তিগত তথ্য প্রদান

 জাতীয় পরিচয়পত্র আবেদনের সিস্টেমে একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন হলে, আপনি নিচের মত একটি ড্যাশবোর্ড দেখবেন। যদি অটোমেটিক লগ ইন না হতে পারেন, আপনার ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগ ইন করতে পারবেন।

আপনার নতুন জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য আবেদন করবেন। প্রোফাইল অপশনে ক্লিক করুন এবং উপরের ডান পাশ থেকে এডিট বাটনে ক্লিক করুন। যেখানে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য, অন্যান্য তথ্য ও ঠিকানা লিখতে হবে। অবশ্যই আপনার পিতা ও মাতার নাম ও জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর লিখতে হবে।

এর পর স্বামী/স্ত্রীর তথ্য বৈবাহিক অবস্থা অবশ্যই দিবেন, এবং স্বামী বা স্ত্রীর নাম জাতীয় পরিচয়পত্র অনুসারে দিবেন।

এবার অন্যান্য তথ্যে ক্লিক করুন। আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশা ও ধর্ম বাছাই করুন। অন্য তথ্যগুলো সম্ভব হলে দিতে পারেন। এরপর ঠিকানা অপশনে যান এবং আপনার বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা বাছাই করুন। তারপর আপনি বর্তমান নাকি স্থায়ী ঠিকানায় ভোটার হতে চান সেই ঠিকানার পাশে (এই ঠিকানায় ভোটার) এর পাশে টিক দিন। বর্তমান ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানা নির্বাচন করুন এবং ভোটার এরিয়া নির্বাচন করুন।

৩. কাগজপত্র আপলোড ও আবেদন জমা

আপনার অবশ্যই প্রয়োজনীয় কাগজগুলোর স্ক্যানড কপি বা ছবি আপলোড করতে হবে না।

আপনার আবেদনের বিস্তারিত তথ্যসমূহ পুনরায় যাচাই করে নিন যাতে কোন ভুল না থাকে।

তথ্যসমূহ সঠিক থাকলে আপনার আবেদনটি নিশ্চিত করুন ও জমা দিন।

অনলাইনে আবেদন জমা হলে, ড্যাশবোর্ড থেকে আপনার আবেদন ফর্মটি ডাউনলোড করে A4  সাইজ কাগজে প্রিন্ট করে নিন। এরপর আপনি যে এলাকায় ভোটার হচ্ছেন সে এলাকার নির্বাচন অফিসে আবেদনটি অন্যান্য কাগজপত্র সহ আবার জমা দিন। আপনার আবেদন প্রক্রিয়া শেষ।

ধাপ ২- আপনার আবেদনটি উপজেলা বা জেলা নির্বাচন অফিস যাচাই বাছাই করবে। যাচাই করার জন্য আপনার সাথে তারা যোগাযোগ করতে পারে।

 ধাপ ৩- বায়োমেট্রিক প্রদান আবেদনটি যাচাই শেষে আপনার ছবি ও আঙ্গুলের ছাপ নেয়ার জন্য ডাকা হবে। এর ১০ থেকে ১৫ দিন পরে আপনার আবেদনটি অনুমোদিত হলেই আপনি অনলাইন হতে জাতীয় পরিচয়পত্র ডাউনলোড করতে পারবেন।

 ধাপ ৪- জাতীয় পরিচয়পত্র ডাউনলোড আবেদনটি অনুমোদিত হলে, আপনার দেয়া মোবাইল নম্বরে মেসেজ পাবেন যে আপনার আবেদনটি অনুমোদিত হয়েছে। আপনার আবেদনটির সর্বশেষ অবস্থা আপনি আপনার ভোটার আইডি কার্ড এর ড্যাশবোর্ড থেকে দেখতে পারবেন। 

আপানার আবেদনটি জমা দেয়ার পর আবেদনটি উপজেলা বা জেলা নির্বাচন অফিস যাচাই বাছাই করবে। সব কিছু ঠিক থাকলে আপনাকে বায়োমেট্রিক প্রদানের জন্য ডাকা হবে। আবেদনটি যাচাই শেষে আপনার ছবি ও আঙ্গুলের ছাপ নেয়ার জন্য ডাকা হবে। ছবি তোলার ১০ থেকে ১৫ দিন পরে আপনার আবেদনটি অনুমোদিত হলেই আপনি অনলাইন হতে জাতীয় পরিচয়পত্র ডাউনলোড করতে পারবেন।

আজকের এই পোস্টে আমি আপনাদের সাথে নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম  জানাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আশা করছি আজকের ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দিতে পেরেছি। এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকলে তা কমেন্ট করে জানাতে পারেন।আপনি অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন আমাদের এই পৌষ্টের মাধ্যমে

Leave a Comment