আমাদের শরীরের কোথাও কেটে গেলে বা সার্জারির পরে ক্ষত দ্রুত না শুকালে সংক্রমণ ও জটিলতার ঝুঁকি বেড়ে যায়। আমাদের শরীরের নানা স্থানে কেটে যায় এবং ক্ষতের সৃষ্টি করে তাছাড়া অনেকেরই ঘা হয়ে যায় যা বেশ যন্ত্রণাদায়ক। আমাদের শরীর সঠিকভাবে পরিষ্কার করা না হলে খুব সাধারণ এই কাটাছেঁড়া থেকে ইনফেকশন বা সংক্রমণ হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এ সময় আমাদের শরীরের পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে, যাতে শরীরের ক্ষতস্থান দ্রুত শুকাতে সাহায্য করে। চলুন জেনে নেয়া যাক এমন কিছু জাদুকরী খাবার আছে যা খুব দ্রুত ক্ষত বা ঘা সারাতে কাজ করে।
কাটা জায়গা তাড়াতাড়ি শুকানোর উপায়
শরীরে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ যোগাতেও সার্জারি পরবর্তী খাদ্যতালিকায় গরুর কলিজা রাখতে পারেন। ভিটামিন এ পুষ্টি গভীর ও ক্ষরণশীল ক্ষতে সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে পারে। টমেটো উপাদানটি জারণের বিরুদ্ধে কাজ করে শরীরের কোষকে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া থেকে রক্ষা করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতেও সাহায্য করে। স্বাস্থ্যকর চর্বি ফল ও শাকসবজির পুষ্টি শোষণে সহায়তা করে। সুস্বাদু সুপারফুডটি আপনার সকালের নাশতায় ডিমের সাথে বা পাস্তায় অথবা সালাদে যোগ করুন।চলুন জেনে নেই কিছু ঘরোয়া উপায় কাটা জায়গা শুকানোর উপায়…..
আরো পড়ুন: চোখের নিচের কালো দাগ দূর করার উপায়
সবজি : সকল ধরনের সবজির ভিটামিন ও মিনারেল ক্ষতস্থান শুকাতে সহায়তা করে। আপনি ভিটামিন ও মিনারেল জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ সবজি হলো: গাজর, বেল পিপার বা ক্যাপসিকাম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ব্রোকলি, মিষ্টি আলু, লেবু ও গোল আলু। সকল ধরনের সবজি খাবার হলো কার্বোহাইড্রেটের স্বাস্থ্যকর উৎস, যা সার্জারি করে হাসপাতাল থেকে ঘরে আসার পর যে ক্লান্তি অনুভূত হয় তা কাটিয়ে ওঠতে সাহায্য করে। কার্বোহাইড্রেট মস্তিষ্ককে শক্তি যোগায় ও মাংসপেশির ভাঙন থামায়। সবজি থেকে শরীর প্রচুর ভিটামিন এ, ভিটামিন সি ও ফাইবার পাবে। সবজির ফাইবার সার্জারি-পরবর্তী কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রবণতা কমাবে। সার্জারির পর ব্যথানাশক ওষুধের ব্যবহার ও নড়াচড়া কমে যাওয়ার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য হয়।
মুরগির মাংস: আমাদেরকে শারীরিক ভাবে সুস্থ থাকার জন্য পর্যাপ্ত প্রোটিন খাওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। সার্জারির অথবা কোথাও কেটে যাওয়ার পর ডায়েটে প্রোটিন রাখার গুরুত্ব আরো বেড়ে যায়। এসময় উচ্চ পরিমাণে প্রোটিন ও আয়রন খেতে হবে। সার্জারির সময় মাংসপেশি ড্যামেজ হতে পারে। প্রোটিনের অ্যামাইনো অ্যাসিড নতুন টিস্যু সৃষ্টি ও ক্ষত নিরাময় দ্রুত করে মাংসপেশির ড্যামেজ মেরামতে সাহায্য করে। আয়রন নতুন রক্তকণিকা তৈরি করে দ্রুত শক্তি ফিরিয়ে আনে। এসময় মুরগির মাংস, সামুদ্রিক মাছ, বিনস, মসুর ডাল, ডিম ও বাদাম খেয়ে শরীরে প্রোটিন সরবরাহ করতে পারেন। অ্যামাইনো অ্যাসিড হলো প্রোটিনের গাঠনিক উপাদান, যা ক্ষত নিরাময় ও রোগতন্ত্রের কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
আরো পড়ুন: মুখের কালো দাগ দূর করার উপায়
মধু: মধুতে প্রাকৃতিক অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং এটি প্রদাহ কমাতে সাহায্য করতে পারে। ত্বকে মধু লাগালে তা ব্যাথা কমাতে সাহায্য করে তাছাড়া ইনফেকশন সৃষ্টিকারী ব্যাক্টেরিয়া দমনেও মধু বেশ কার্যকর। মধু অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান ক্ষতের সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করে। তবে এক্ষেত্রে খাঁটি মধু ব্যবহার করতে হবে, কারণ রান্না করার ফলে মধুর উপকারী এনজাইম নষ্ট হয়ে যায়। প্রতিদিন ১ চামচ মধু খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
বেরি: অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের ক্ষত প্রতিরোধে সাহায্য করে। বেরিতে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। বেরিতে রয়েছে ভিটামিন সি পুষ্টিতে ভরপুর বেরি ক্ষত দ্রুত সারিয়ে তোলে। শুধু বেরি নয়, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ অন্যান্য ফলও খেতে পারেন।ভিটামিন সি সমৃদ্ধ আরো কিছু খাবার হলো- লেবু, কমলা, পেয়ারা ও মোসাম্বি। অস্ট্রেলিয়া এক গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন সি কোলাজেন ও সফট টিস্যু মেরামতে সহায়ক। তাই ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খেলে ক্ষতস্থান দ্রুত সেরে ওঠে।
আরো পড়ুন: ইমারজেন্সি পিল খাওয়ার নিয়ম
ডিম: ডিম আমাদের সবচাইতে একটি জনপ্রিয় খাবার এবং এর পুষ্টিগণ সবচাইতে বেশি। সার্জারির পর ক্ষত নিরাময়ের জন্য শরীরে দৈনিক সুপারিশকৃত পরিমাণের চেয়েও বেশি প্রোটিনের প্রয়োজন হয়। সাধারণত শরীরের প্রতি কেজি ওজনের জন্য দৈনিক সুপারিশকৃত প্রোটিনের মাত্রা হলো ০.৮ গ্রাম। ডিমে প্রোটিন, ভিটামিন এ, ভিটামিন ই, ভিটামিন কে, আয়রন, জিংক, ক্যালসিয়াম, ফলিক অ্যাসিড ও রিবোফ্লাভিন রয়েছে। ডিমের পুষ্টি সার্জারির পর রোগীকে দ্রুত নিরাময় দিতে কাজ করে।
সয়া প্রোটিন: সয়া প্রোটিনে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন যা আপনার শরীরের শুকাতে অনেক সাহায্য করে। সয়া প্রোটিনে রয়েছে ভিটামিন এ, সি, ডি, ই এবং কে থাকে যা পরিপাকের কাজে সাহায্য করে, ইমিউন সিস্টেমকে সহায়তা দান করে এবং ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। এছাড়াও সয়া প্রোটিনে উচ্চ মাত্রার প্রোটিন থাকে যা নতুন টিস্যুর গঠনে সাহায্য করে।
চকলেট: আপনারা এটা শুনে খুশি হবেন যে সার্বিক সুস্বাস্থ্য বিশেষ করে ক্ষত নিরাময়ে উপকারী ভূমিকা রাখে চকলেট। ড্রাগ চকলেট ক্ষততে অক্সিজেন, পুষ্টি উপাদান এবং ভিটামিন সরবরাহ করার প্রধান কাজটি করে রক্ত। এছাড়াও এতে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান আছে যা ইমিউন সিস্টেমকে ইনফেকশনের হাত থেকে রক্ষা করে। কনটেম্পোরারি রিভিউজ ইন কার্ডিওভাস্কুলার মেডিসিন এর রিপোর্ট অনুযায়ী স্বাস্থ্যকর রক্তচাপের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে ডার্ক চকলেট।
DR. REYAN ANIS
MBBS (DMC), MRCP (UK)
Senior Consultant
সুপ্রিয় দর্শক আপনাকে স্বাগতম জানাচ্ছি আপনারা যারা বিভিন্ন সমস্যা নিরাময় করার জন্য বিভিন্ন বড় বড় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলো এবং বড় বড় ডাক্তারদের পরামর্শ গ্রহণ করতে চাচ্ছেন তাদের জন্য সকল ডাক্তারের পরামর্শ ও মতামত এবং সময় চিকিৎসা বিষয়ে সকল তথ্য সংগ্রহ করে আপনাদের কাছে আমি উপস্থাপন করব।