বৃষ্টির পানিতে যে সমস্ত উপকারিতা রয়েছে

বর্ষাকালে যখন তখন বৃষ্টি শুরু হয় ভারী বর্ষণের সময় পরিবেশে যে জলীয় বাষ্প থাকে তা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। আমরা অনেকে তীব্র গরমে শখের বশে বৃষ্টিতে ভিজেন, আবার অনেকে কর্মক্ষেত্রে যেতে গিয়ে কিংবা পথচলতি অবস্থায় ভিজে যান বৃষ্টিতে। সে যা-ই হোক না কেন বৃষ্টিতে ভিজলে মনে অনেক আনন্দ জাগে।  অনেকের ধারণা বৃষ্টিতে ভিজলে অনেক রোগের আক্রমণ ঘটে দেহে, আসলে যা মোটেও ঠিক নয়। তবু ঝুম বৃষ্টি নামলে কিছুটা সময় বৃষ্টি জলে ভিজতে ইচ্ছে করে কম বেশি সবারই। অস্ট্রেলিয়ার একটি গবেষণা রিপোর্টের দাবি, বৃষ্টির পানি পান করা সবচেয়ে নিরাপদ। মাটি অথবা পাথরে থাকা মিনারেলস আর বর্জ্য, বৃষ্টির পানিতে থাকে না। জেনে নিন বৃষ্টিতে পানিতে আপনার শরীরে যেভাবে উপকার মিলবে-

মানসিক অবসাদ কমায়; বৃষ্টিতে ভিজলে শরীরে এন্ডোরফিন ও সেরাটোনিন নামক হরমোনোর ক্ষরণ হয়। যা আমাদের আনন্দের অনুভূতি দেয়।  বৃষ্টি পড়লে মটিতে উপস্থিত এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া বিশেষ এক ধরনের কেমিক্যাল ছড়ায়। যার ফলে এমন সোঁদা গন্ধ বেরতে শুরু করে। আর এ গন্ধ মানসিক অবসাদ দূর করতে বেশ সহায়ক। বৃষ্টির পানি পান করলে শরীরে জমে থাকা টক্সিন বের হয়ে যায়।  এটি রক্তের পিএইচ লেভেলকে স্বাভাবিক মাত্রায় নিয়ে আসে স্বাভাবিকের ঘরে।

ফত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে;  বিজ্ঞানীরা বলছেন, সুন্দর সুস্থ ত্বক পেতে হলে, বৃষ্টির পানি অত্যন্ত উপযোগী।  বৃষ্টির পর জলীয় বাষ্প বেড়ে যাওয়ার ফলে পরিবেশে থাকা একাধিক ক্ষতিকর জীবাণুর কর্মক্ষমতাও কমে যায়। ফলে ত্বক হয় আরও উজ্জ্বল ও নমনীয়। ত্বকের হারিয়ে যাওয়া সৌন্দর্য ফিরে পেতে বৃষ্টি দারুণ কাজ করে।লে শরীরে অ্যাসিডিটির মাত্রা কমে যায় এবং রোগের প্রকোপ কমে আসে।

কানের সমস্যার সমাধান; বৃষ্টির পানির আরেকটি অন্যতম কার্যকারিতা হলো কানের সমস্যা দূর করা। বৃষ্টিতে ভিজলে কানের সব ধরনের সমস্যা দূর হয়। তবে মাত্রাতিরিক্ত ভিজলে বা বাতাস থাকলে ঠান্ডা লেগে যেতে পারে। ১০-১৫ মিনিটের বেশি ভেজা উচিত নয়। বৃষ্টির পানিতে ভেজার পরপরই হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল করে ফেলতে হবে।

সুন্দর চুল; বৃষ্টির পানিতে প্রাকৃতিকভাবে অ্যালকালাইন থাকে, যা চুলের ক্লিনজার হিসেবে কাজ করে।  যা মাথার ত্বকে থাকা ব্যাকটেরিয়া এবং ময়লা দূর করে। বৃষ্টির পানিতে চুলের গোড়া মজবুত হয়। নিয়মিত বৃষ্টির পানিতে গোসল করলে রুক্ষ চুল অনেক বেশি স্বাস্থ্যজ্বল হয় ও চকচকে দেখায়। সবচেয়ে ভালো হয় যদি নিমজাতীয় শ্যাম্পু বা সাবান করেন। কেবল তাই নয়, খুশকি দূর করতেও দারুণ উপকারী এ বৃষ্টির পানি। 

ভিটামিন বি; বৃষ্টির পানিতে  খুব হালকা এবং অ্যালকালাইন পিএইচ সমৃদ্ধ।  যেগুলো বিপাকের মাধ্যমে ভিটামিন বি-১২ তৈরি করে। ফলে বৃষ্টিতে ভিজলে ভিটামিন বি এর অভাব দূর হয়। যদি ভিটামিনের অভাব থাকে; তাহলে নিয়মিত ১০-১৫ মিনিট বৃষ্টিতে ভিজতে পারেন। বৃষ্টির পানিতে ভেজার পর অবশ্যই সাবান দিয়ে ভালোমতো গোসল করে নিতে হবে।

রাসায়নিক মুক্ত পানি;  ট্যাপের পানি জীবাণুমুক্ত করতে ক্লোরিন ব্যবহার করা হয়। আর ফ্লোরাইড আসে মাটির নিচ থেকে। বেশি মাত্রায় ক্লোরিন বা ফ্লোরাইড পেটে গেলে গ্যাসট্রাইটিস, মাথা ব্যথার মতো সমস্যা বাড়ে।  ত্বকের বিভিন্ন ফুসকুড়ি ও চুলকানির সমাধান আছে বৃষ্টির পানিতে। বৃষ্টির পানিতে ভিজলে বা নিয়মিত গোসল করলে চুলকানি ও ত্বকের খসখসে ভাব চলে যায়। বৃষ্টির পানিতে ফ্লোরাইড বা ক্লোরিন, কোনওটিই থাকে না।

হজম শক্তি বাড়ায়; বৃষ্টির পানিতে থাকে অ্যালকালাইন পিএইচ যা অ্যাসিডিটি কমায়, হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।  তাই এ সময়ে দেহে প্রবেশ করা বায়ু আমাদের শ্বাসপ্রক্রিয়ার উন্নতি ঘটায়। সেই সঙ্গে দূর হয় শরীরে অবস্থান করা বাজে টক্সিন।  ভারতের কোথাও কোথাও পেটের চিকিৎসায় প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ২ থেকে ৩ চামচ বৃষ্টির পানি খেতে বলা হয়। 

আজকের এই পোস্টে আমি আপনাদের সাথে বৃষ্টির পানির উপকারিতা জানাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আশা করছি আজকের আর্টিকেলে সে সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দিতে পেরেছি। এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকলে তা কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আপনি সজনে পাতা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন আমাদের এই পৌষ্টের মাধ্যমে…..

Leave a Comment