প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আশা করি তোমরা অনেক ভালো আছো আজকে আমরা শিখব কিভাবে দরখাস্ত লিখতে হয় তার সবচেয়ে আধুনিক পদ্ধতি। আবেদন পত্র বা দরখাস্ত আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত ও প্রয়োজনীয় একটি বিষয়। সঠিকভাবে বাংলা দরখাস্ত লেখার নিয়ম জানার অভাবে আমরা এ বিষয়ে অভিজ্ঞদের কাছ থেকে দরখাস্ত বা আবেদন লেখার নিয়ম জেনে নিতে হয়। কলেজে অনুপস্থিতির জন্য হোক কিংবা কলেজে ছুটির জন্য, আমাদের সবারই হয়তো কখনও না কখনও ‘দরখাস্ত’ লেখার প্রয়োজন পরেছে। এই দরখাস্ত আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত খুবই প্রয়োজনীয় একটি বিষয়।
কলেজে দরখাস্ত লেখার নিয়ম
আপনি যদি কলেজে একটি দরখাস্ত লিখতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই কিছু দরখাস্তের নিয়ম কানুন মেনে চলতে হবে তাই আমরা আপনাকে নিশ্চয়ই স্টেপ বাই স্টেপ দরখাস্ত লেখার নিয়ম বুঝিয়ে দেব-
১. তারিখ: তারিখ হচ্ছে দরখাস্তের সবচাইতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তাই সঠিকভাবে তারিখটি লিখতে হবে। মনে রাখতে হবে, তুমি যে তারিখে আবেদন সাবমিট করবে, তারিখ যেন সেইদিন অনুযায়িই হয়।
২. বরাবর: দরখাস্ত যার বরাবর লিখবেন তার পদ মর্যাদা লিখতে হবে। যেমন- প্রধান শিক্ষক, অধ্যক্ষ, চেয়ারম্যান, জেলা প্রশাসক ইত্যাদি এবং তার ঠিকানা।
৩. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম: এই অংশে তুমি তোমার কলেজের নাম লিখবে। কলেজের নামের শেষে উপজেলা ও জেলার নাম উল্লেখ করতে ভুলবে না যেন।
৪. বিষয়: আপনাকে বিষয় লেখার ক্ষেত্রে কোনভাবে ভুল করা যাবে না বিষয়টি সঠিকভাবে উপস্থাপন আপনাকে করতে হবে। এই অংশে সংক্ষিপ্ত একটি বাক্যে উল্লেখ করবে।
৫. সম্বোধন: দরখাস্তের মূল অংশ শুরু করার আগে যাকে দরখাস্তের মাধ্যমে আর্জি জানাবেন তাকে সম্মানসূচক সম্বোধন করে লিখবেন। তবে তুমি ইচ্ছে করলে মহোদয় শব্দটিও লিখতে পারো।
৬. সূচনা: দরখাস্তের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে সূচনা। তুমি কি বা কারা তা সম্মান প্রয়োগের মাধ্যমে বলতে হবে। যেমন: ‘যথাবিহীত সম্মানপূর্বক নিবেদন করছি’ বা যথাযথ সম্মানের সাথে নিবেদন করছি’ ইত্যাদি।
৭. মূল অংশ: দরখাস্তের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে মূল অংশ। এ অংশে তোমার প্রয়োজনীয় কথাগুলো অত্যন্ত গুছিয়ে এবং পরিমার্জিত ভাষায় বর্ণনা করবে। এই অংশে অপ্রয়োজনীয় কথা পরিহার করে মূল বিষয়বস্তু অল্প কথায় ফুটিয়ে তুলতে হবে। মূল অংশ অযথা দীর্ঘায়িত করবে না।
৮. অতএব অংশ: দরখাস্তের মূল অংশে লেখা বিষয়বস্তুর দ্বারা তুমি কি প্রার্থনা করছো, অতএব অংশে লিখবে। অতএব শব্দটির পর একটি কমা দিয়ে এখানেও বাক্যটি সম্মান প্রয়োগের সাথে শুরু করতে হবে।
৯. নিবেদক: দরখাস্তের এই অংশে তুমি তোমার পূর্ণ নাম লিখবে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে একটি আবেদন দলীয়ভাবেও লেখা হয়। তখন সবার পক্ষ থেকে একজন স্বাক্ষর দেবে।
১০. স্বাক্ষর: আবেদন পত্রটি যদি হাতে লেখা হয়, তাহলে আলাদা করে স্বাক্ষর অংশের প্রয়োজন হয় না নিবেদকের নিচে নিজের নাম লিখলেই হয়। তবে আবেদন পত্রটি কম্পিউটারে কম্পোজ করা হলে কম্পিউটারে টাইপ করা নামের নিচে পুনরায় নিজের নাম কলম দিয়ে লিখতে হয়।
কলেজে দরখাস্ত লেখার নমুনা
বিবাহ উপলক্ষে অগ্রিম ছুটির জন্য দরখাস্ত
তারিখ ০১/০১/২০২৫ ইং
বরারব
অধ্যক্ষ
বানেশ্বর কলেজ
পুঠিয়া, রাজশাহী
বিষয়: অগ্রীম ছুটির জন্য আদেদন।
জনাব,
বিনীত নিবেদন এই যে , আমি আপনার কলেজের দ্বাদশ শ্রেনীর একজন নিয়মিত ছাত্র। আগামী ০১/০১/২০২২ আমার বড় বোনের বিয়ে অনুষ্ঠিত হবে । বিয়ের আগে ও পরেপারিবারিক আনন্দ বিনোদন এবং আনুষ্ঠনিকতার অংশগ্রহনের জন্য আগামী ০১/০১/২০২২ থেকে ০৩/০১/২০২২ জানুয়ারি পযন্ত মোট তিন দিনের আমার ছুটি গ্রহন অত্যন্ত প্রয়োজন।
অতএব মহোদয়ের নিকট আমার আকুল প্রার্থনা এই যে , আমাকে উক্ত দিনগুলো ছুটি প্রদানে আপনার সুমর্জি কমনা করছি।
নিবেদক
আপনার একন্ত আনুগত ছাত্র
নাম: মোঃ মনির ইসলাম
শ্রেনী: দ্বাদশ
রোল:২২
অসুস্থতার জন্য অগ্রিম ছুটির জন্য দরখাস্ত
তারিখ ০১/০১/২০২৫ ইং
বরারব
অধ্যক্ষ
বানেশ্বর কলেজ
পুঠিয়া, রাজশাহী
বিষয়: অগ্রীম ছুটির জন্য আদেদন।
জনাব,
বিনীত নিবেদন এই যে , আমি আপনার কলেজের দ্বাদশ শ্রেনীর একজন নিয়মিত ছাত্র। গত কয়েকদিন যাবৎ ০১/০১/২০২৫ হতে অসুস্থ থাকার কারনে কলেজে উপস্থিত থাকতে পারিনি। তাই আগামী ০১/০১/২০২৫ থেকে ০৩/০১/২০২৫ জানুয়ারি পযন্ত মোট তিন দিনের আমার ছুটি গ্রহন অত্যন্ত প্রয়োজন।
অতএব মহোদয়ের নিকট আমার আকুল প্রার্থনা এই যে , আমাকে উক্ত দিনগুলো ছুটি প্রদানে আপনার সুমর্জি কমনা করছি।
নিবেদক
আপনার একন্ত আনুগত ছাত্র
নাম: মোঃ মনির ইসলাম
রোল:২২
শ্রেনী: দ্বাদশ
কলেজে প্রশংসাপত্র চেয়ে অধ্যক্ষ নিকট
তারিখ ০১/০১/২০২৫ ইং
বরাবর
অধ্যক্ষ
বানেশ্বর কলেজ
পুঠিয়া, রাজশাহী
বিষয়: প্রশংসাপত্রের জন্য আবেদন ।
জনাব,
সবিনয় বিনীত নিবেদন এই যে, আমি মোঃ রাশেদ রানা আপনার কলেজের একজন নিয়মিত ছাত্র। ২০২৩ সালে রাজশাহী বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত এইচ এস সি পরীক্ষায় আমি জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছি। কলেজের গত ২ বছর অধ্যয়নকালে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে আমি সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলাম। কোনো আইনশৃঙ্খলা বিরোধী কাজের সংঙ্গে আমার সম্পৃক্ততা ছিল না। আমি সরকারি কলেজে ভর্তি হতে ইচ্ছুক। তাই আপনার স্বাক্ষরিত একটি প্রশংসাপত্র অত্যন্ত প্রয়োজন।
অতএব, জনাবের নিকট আকুল আবেদন এই যে, অনুগ্রহপূর্বক আমাকে চারিত্রিক ও শিক্ষাবিষয়ক প্রশংসাপত্র প্রদান করে বাধিত করবেন।
বিনীত নিবেদক
আপনার একান্ত অনুগত ছাত্র
মোঃ রাশেদ রানা
এইচ এস সি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ছাত্র
পরীক্ষার ক্রমিক নম্বরঃ ১৫৫২০৩৪৩৩
উপবৃত্তির জন্য আবেদন পত্র লেখার নিয়ম
তারিখ ০১/০১/২০২৫ ইং
বরাবর
অধ্যক্ষ
বানেশ্বর কলেজ
পুঠিয়া, রাজশাহী
বিষয়: উপবৃত্তির জন্য আবেদন।
জনাব,
যথাবিহিত সম্মান প্রদর্শনপূর্বক সবিনয় নিবেদন এই যে,আমি আপনার কলেজের দ্বাদশ শ্রেনীর একজন নিয়মিত ছাত্র। আমার বাবা একজন দরিদ্র কৃষক। আমার বাবাই আমাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। গত কয়েকমাস ধরে আমার বাবা শারীরিকভাবে খুবই অসুস্থ। তাই আমার বাবার পক্ষে পরিবারের খরচ বহন করার পর আমাদের ৪ ভাই-বোনের পড়াশোনার খরচ চালানো খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে।
অতএব, জনাবের নিকট আকুল আবেদন এই যে, আমার উপরোক্ত আর্থিক সমস্যার কথা বিবেচনা করে আমাকে উপবৃত্তি প্রদানে জনাবের নিকট মর্জি প্রার্থনা করছি।
বিনীত নিবেদক
আপনার একান্ত বাধ্যগত ছাত্র
মোঃ শাকিব রানা
শ্রেনী: দ্বাদশ
বিভাগ: মানবিক
রোল নং ০৭
আজকের এই পোস্টে আমি আপনাদের সাথে কলেজে দরখাস্ত লেখার নিয়ম জানাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আশা করছি আজকের আর্টিকেলে সে সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দিতে পেরেছি। এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকলে তা কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আপনি ছুটির জন্য দরখাস্ত/আবেদন নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন আমাদের এই পৌষ্টের মাধ্যমে…..
সুপ্রিয় দর্শক আপনাকে স্বাগতম জানাচ্ছি আমাদের দেশের সকলের এই নাগরিক অধিকার রয়েছে এবং এদেশের প্রতি বিশেষ কিছু দায়িত্ব রয়েছে। আর প্রত্যেকটি নাগরিকের প্রয়োজন হয় সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তথ্য যেগুলোর মাধ্যমে মানুষ চাকুরী ব্যবসা বা সম্পত্তি সংক্রান্ত সকল তথ্য প্রয়োজন হয় আমি আপনাদের কাছে উপস্থাপন করব।