গর্ভাবস্থায় সঠিক খাবার তালিকা অনুযায়ী পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার গ্রহন করতে হবে। কারন গর্ভের শিশুটি যাতে প্রয়োজনীয় পুষ্টি পায় তা নিশ্চিত করতে হয় গর্ভবতী মা কেই। তাই পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতেই হবে মাকে। সুস্থ থাকার জন্য সব সময়ই সুষম খাদ্য খাওয়া উচিৎ। কিন্তু গর্ভাবস্থার জন্য এটি আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভের শিশুটি যাতে প্রয়োজনীয় পুষ্টি পায় তা নিশ্চিত করতে হবে আপনাকেই। তাই পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে মাকে। যে ৭টি খাবারে মা ও শিশু দুজনই সুস্থ থাকবে এটা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-
ফল ও শাকসবজি
ফল ও শাকসবজি দিনে ৫ বার ফল ও ৭ বার সবজি খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। ফলের চেয়ে শাকসবজি বেশি খান। ফলের জুস ও স্মুদিও পান করতে পারেন। ফলের রস না খেয়ে পুরো ফল টাকেই ব্ল্যান্ড করে নিবেন, এতে ভিটামিন মিনারেলস এর সাথে সাথে আঁশ পাবেন,যা আপনাকে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করবে।
ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার
ক্যালসিয়াম একথা প্রায় সবারই জানা হাড় ও দাঁত সুস্থ রাখার পাশাপাশি পেশি গঠনে ভূমিকা রাখে ক্যালসিয়াম। দুধ খাওয়ার পাশাপাশি অন্যান্য ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া দেহের চাহিদা পূরণে সহায়তা করে। নিউ ইয়র্ক’য়ে ‘ফাংশনাল মেডিসিন এক্সপার্ট এবং লেখক ডা. মার্ক হেম্যান ইন্সটাগ্রামের মাধ্যমে জানান, দুধ ছাড়াও ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ আরও অনেক খাবার আছে যা সুস্বাস্থ্যে ভূমিকা রাখে। এই তথ্যের সূত্র ধরে ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের পুষ্টিবিদ সুজান পির্কেল বলেন, “খুব সহজেই ভেষজ উপাদান থেকে দৈনিক ১০০০ মি.গ্রা. ক্যালসিয়াম পাওয়া সম্ভব।
আয়রন সমৃদ্ধ খাবার
নিত্যদিনকার খাবার ম্যানু তে আয়রন সমৃদ্ধ খাবার যোগ করা উচিত। এর জন্য জেনে নেয়া প্রয়োজন কোন কোন খাবারে আয়রন রয়েছে এবং কি পরিমাণে রয়েছে। প্রকৃতিতে আয়রন দুই ভাবে পাওয়া যায়। হিমি আয়রন যা বিভিন্ন ধরনের মাংসে পাওয়া যায়।এবং উদ্ভিজ্জ আয়রন যা বিভিন্ন শাকসবজি ফলমূল বা শুকনো খাবার যেমন ড্রাই ফ্রুটস এ পাওয়া যায়। উচ্চ মাত্রায় আয়রনযুক্ত খাবারের তালিকা অর্থাৎ যে সকল খাবারে লৌহ জাতীয় মিনারেলস রয়েছে এমন খাদ্যের পুষ্টিমান সহ তালিকা নিচে দেয়া হলো।
আমরা কিছু সাধারণ আয়রন সমৃদ্ধ খাবার এর নাম সবাই জানি। যেমন কলিজা, যার ৪ আউন্স এ ৭ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে। ডিমের কুসুমে ০.৫ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে এবং গরুর ও মুরগির মাংস তে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে যা বাংলাদেশী খাবার ম্যানু তে সপ্তাহে প্রায় ২-৩ দিন থাকেই। সবুজ শাকসবজি এর মধ্যে পালংশাক, টমেটো, মিষ্টি কুমড়ো তে আয়রন রয়েছে। ফলের মধ্যে আনার বা ডালিম, বিট, কালো আঙ্গুর, আপেল এর মধ্যে ও প্রচুর আয়রন রয়েছে। মধ্যম সাইজের একটি আপেলে আয়রন থাকে ০.৩১ মিলিগ্রাম।
দুগ্ধজাত খাবার
দুগ্ধজাত খাবার দুধ, পনির, দই ইত্যাদি খাবারগুলো ক্যালসিয়ামের চমৎকার উৎস। এগুলোর চিনি ও ফ্যাটের পরিমাণ যেন কম থাকে সেটি খেয়াল করতে হবে। ফ্যাট জাতীয় খাবার শিশুর মস্তিষ্কের কোষ গঠনে সাহায্য করে। মানুষের শরীরেই আয়োডিনের ঘাটতি থাকে। আয়োডিন এমন একটি খনিজ উপাদান যা শিশুর মস্তিষ্কের গঠনের জন্য অপরিহার্য। দুগ্ধজাত খাবার ও সামুদ্রিক খাবার আয়োডিনের চমৎকার উৎস। গর্ভাবস্থায় মায়ের শরীর অনেক বেশি কাজ করে। তবে সাধারণত প্রথম ৬ মাসে বাড়তি ক্যালোরির প্রয়োজন হয়না। সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে যখনই ক্ষুধাবোধ হবে তখনই খাবেন।
মাংস জাতীয় খাবার
মা ও শিশু দুজনার জন্যই মাংসের প্রয়োজন হয়ে থাকবে কারণ মাংস রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন আর মাংসের তরকারি খেলে এই প্রোটিনের অভাব দূর হবে এই জন্য গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকায় মাংসের প্রয়োজনীয়তা অনেক ক্ষেত্রে আপনি কবিতর ও দেশি মুরগির মাংস ভুনা করে খেতে পারেন এবং মাংস থেকে না শরীরে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিনের অভাব দূর করবে এবং আপনার শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকবেন এবং আপনার শিশুর শিশুর শারীরিক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে তাই মুরগি কবুতর বা ছাগলে মাংস খেতে পারেন আপনি।
ফলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার
ফলিক অ্যাসিড বা ফোলেট শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি ভিটামিন। এটিকে ভিটামিন বি-৯ বলা হয়ে থাকে। ফলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার রান্না করা সাদা চাল আটা সুজি ওটস উৎকৃষ্ট ময়দা সোয়াবিন বরবটি শিম শুকনো মটরশুটি কাজুবাদাম কাঠবাদাম চিনাবাদাম আখরোট তিল বীজ ইত্যাদি। তাহলে গর্ভবতী মহিলাদের জন্য ফোলিক অ্যাসিড এত গুরুত্বপূর্ণ কেন? এই নির্দিষ্ট ভিটামিনটিতে বিশেষ কি আছে যা গর্ভাবস্থার সময় বাকিগুলি থেকে একে পৃথক করে দেয়? আচ্ছা, এই নির্দিষ্ট ভিটামিন শুধু আপনার নিজের জন্য উপকারী নয়, এটি আপনার বাচ্চার জন্যও ভাল।
ফোলিক এসিড শুধু প্লাসেন্টার দ্রুত কোষ বৃদ্ধিতেই সহায়তা করে না, তবে অজাত শিশুকে গর্ভে থাকাকালীন জন্মগত ত্রুটির বিকাশ ঘটা থেকে রক্ষা করে, এটিই হল গর্ভবতী মহিলাদের জন্য এটিকে নির্ধারিত করার মূল কারণগুলির একটি কারণ। আসলে, ফোলিক অ্যাসিড একটি দৈনিক প্রয়োজন এবং গর্ভবতী হওয়ার পরিকল্পনাকারী বা শিশুর জন্ম দেওয়ার বয়সী নারীদের জন্যও এটি সুপারিশ করা হয়।
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার
প্রোটিন নিয়ে আলোচনার শেষ নেই। শরীরে এই উপাদানের পর্যাপ্ততা নেই। নানা ধরনের খাবারে পাওয়া যায় এই ‘মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট’ যা শরীরকে যোগায় কর্মশক্তি, কোষের সংখ্যা বাড়ার ও ক্ষয়পূরণের জ্বালানি যোগায়, সাহায্য করে অসংখ্য হরমোন ও এনজাইম তৈরিতে। প্রাণিজ উৎস থেকে আসা প্রতিটি প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারেই ওই নয়টি অ্যামিনো অ্যাসিড থাকবে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল মাছ, মুরগি-হাঁস, ডিম, গরুর মাংস, দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার ইত্যাদি। প্রাণিজ উৎস ছাড়া অন্যান্য খাবার ও উদ্ভিজ্জ উৎসের মধ্যেও পরিপূর্ণ প্রোটিন পাওয়া সম্ভব।
আজকের এই পোস্টে আমি আপনাদের সাথে গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা জানাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আশা করছি আজকের আর্টিকেলে সে সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দিতে পেরেছি। এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকলে তা কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আপনি আবেদন পত্র লেখার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন আমাদের এই পৌষ্টের মাধ্যমে…..
সুপ্রিয় দর্শক আপনাকে স্বাগতম জানাচ্ছি আপনারা যারা বিভিন্ন সমস্যা নিরাময় করার জন্য বিভিন্ন বড় বড় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলো এবং বড় বড় ডাক্তারদের পরামর্শ গ্রহণ করতে চাচ্ছেন তাদের জন্য সকল ডাক্তারের পরামর্শ ও মতামত এবং সময় চিকিৎসা বিষয়ে সকল তথ্য সংগ্রহ করে আপনাদের কাছে আমি উপস্থাপন করব।
আপনাদের থেকে তথ্যগুলি পেয়ে খুবই উপকৃত হয়েছি। আশা করছি সকল গর্ভবতী মায়েদের উপকার হবে এমন সৃজনশীল তথ্য পেয়ে।