মধু মানুষের জন্য আল্লাহ প্রদত্ত এক অপূর্ব নেয়ামত। স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং যাবতীয় রোগ নিরাময়ে মধুর গুণ অপরিসীম। রাসূলুল্লাহ (সা.) একে ‘খাইরুদ্দাওয়া’ বা মহৌষধ বলেছেন। মধু হলো এমন একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা চার হাজার বছর ধরে মানুষের শরীর বৃত্তীয় এবং শারীরিক সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এটি অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি ঔষধি উপাদান। প্রাচীনকালে নানা রোগব্যাধি সারাতে মধু ব্যবহার করা হতো। এবং একটি প্রচলিত ধারণা ছিলো যে, যারা নিয়মিত মধুপান করে তারা দীর্ঘ জীবন লাভ করেন। বৈজ্ঞানিদের মতে নিয়মিত মধু খেলে আপনার শরীরের অনেক রোগ ভাল হয়ে যাবে। আজকে আমরা জানবো মধুর উপকারিতা, আপনি কেন মধু খাবেন? কখন খাবেন, মধুর অপকারিত, খাওয়ার সঠিক নিয়ম ইত্যাদি নিয়ে। চলুন তাহলে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।
মধু খাওয়ার নিয়ম
আমরা সকলেই জানি মধু আমাদের শরীরে জন্য উপকারি। তাই অনেকেই আছেন যারা নিজের মত করে মধু খেয়ে থাকে। মধু পছন্দ করেনা এরকম মানুষ খুঁজে পাওয়া খুবই কষ্টকর। মধু জিনিসটা সবারই প্রিয়। যেহেতু এটা মিষ্টি একটি খাবার তাই এটা সকলেই সেবন করে থাকেন। কিন্তু মধু খাওয়ার সঠিক নিয়ম কি আপনি জানেন? কিন্তু প্রতিটি জিনিসেরেই একটি নিয়ম আছে। আপনি বিভিন্ন সময় মধু থেকে পারেন। মধু দিনে দুবেলা খাওয়া যেতে পারে। সকালে বা রাতে।
আপনি যদি সকালে মধু খান তাহলে হালকা গরম পানিতে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। গরম জলের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খাওয়ার কথা বলা হয়। বিশেষজ্ঞদের মতেও গরম জলের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে বেশ উপকার পাওয়া যায়। কিন্তু মধুর তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড এর উপরে পৌঁছালে মধু বিষাক্ত হয়ে যায়। সকাল খালি পেটে মধুর সঙ্গে হালকা গরম জল মিশিয়ে সেবন করলে শরীর সুস্থ ও সবল থাকে এবং শরীর থেকে টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করে মধু। তাই প্রতিনিয়ত সকালবেলায় মধু খেলে এর উপকার বেশি পাওয়া যায়।
মধু খাওয়ার উপকারিতা
ধুর পুষ্টি নির্ভর করে ধরনের ওপর। সাধারণত এক টেবিল চামচ (২১ গ্রাম) মধুতে ৬৪ ক্যালোরি ও ১৭ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা থাকে। এটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবেও কাজ করে। এসব ঔষধি গুনাগুন এর জন্য মধু নানা রোগব্যাধি সাড়াতে এমনকি ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতেও নানা ভাবে ব্যাবহার হয়ে আসছে। সর্ব প্রথম জানবো মধুর উপকারিতাগুলোঃ
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির দিক থেকে মধুর ভূমিকা অতুলনীয়। মধুতে প্রচুর পরিমাণে মিনারেলস, ভিটামিন, মাইক্রোবিয়াল এজেন্ট, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল প্রপার্টিস, এনজাইম থাকে যা শরীরের ভিতরে যেয়ে কাজ করে একটি অ্যান্টি বডি তৈরি করে যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক গুণে বাড়িয়ে দেয়।
ত্বক উজ্জল করতে সহায়তা করে
মধু আপনার তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করবে। আবার রূপচর্চা বা চুলের যত্নেও বিশেষ কাজ করে। পাশাপাশি সৌন্দয্য বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে। নিয়মিত মধু দিয়ে রূপচর্চা করলে ত্বকে ব্রণ ও অন্যান্য সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়। এছাড়াও এটি ত্বককে কোমল করে এবং ভিতর থেকে উজ্জ্বল করে তোলে।\
যৌন দুর্বলতায়
মধুতে রয়েছে প্রচুর পরিমান অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। এই অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ত্বকের টান টান ভাব ধরে রাখে, কোমলতা প্রদান করে , মুখে ছাপ দূর করে। অনেকেই আছে যারা যৌন দূর্বলতায় ভুগছেন বা দ্রুত বীর্যপাত হয় অথবা যৌন ইচ্ছা কমে যাচ্ছে তারা আজকে থেকে মধু খেতে পারেন। মধুর উপকারিতার মধ্যে এটা খুবই উপকারিত একটি ঔষধ হিসাবে কাজ করে।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
মধুতে আছে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স যা পরিপাক্তন্ত্রকে উন্নত করে।খাবার হজমে সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যতা দূর করে। আমাদের সবারই কম বেশি ডায়রিয়া ও কোষ্ঠকাঠিন্য হয়ে থাকে। মধুতে রয়েছে ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স। যা আপনার ডায়রিয়া ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। ১ চামচ মধু ভোর বেলা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য ও ডায়রিয়া দূর হবে।
ওজন কমাতে সাহায্য করে
মধু দেহের চর্বি কমাতে সাহায্য করে এবং বিপাকিয় শক্তির হার বাড়ায়। ফলে দেহের অতিরিক্ত চর্বি কমে এবং ওজন হ্রাস হয়।প্রতিদিন সকালে খালি পেটে মধু ও লেবু মিশিয়ে খেলে এক্ষেত্রে ভালো ফল পাওয়া যায়। মধুতে উপস্থিত ফ্রুক্টোজ আমাদের শরীরের জন্য গ্লুকোজ হিসেবে কাজ করে। চিনিতে উপস্থিত গ্লুকোজে ক্যালোরি থাকে এবং এতে ভিটামিন, খনিজ এবং অন্যান্য পুষ্টি থাকে না। যেখানে মধুতে ক্যালরির পরিমাণ শূন্য এবং ভিটামিন ও অন্যান্য মিনারেলের পরিমাণ অনেক বেশি। মধু আমাদের শরীরে গ্লুকোজ তৈরি করতে সাহায্য করে এবং এই গ্লুকোজ আমাদের মস্তিষ্কে চিনি বাড়ায়।
হাড় ও দাঁতের গঠনে বা দাঁতের যত্নে
মধুতে রয়েছে ক্যালসিয়াম। ক্যালসিয়াম আমাদের হাড় ও দাতঁ গঠনের মূল উপাদান। মধুতে আছে ক্যাসলিয়াম আর আমরা জানি যে ক্যালসিয়াম দাঁতের এবং হাড়ের জন্য খুবই কার্যকারি। ক্যাসলিয়ামের অভাব পূরন করে আবার অনেকের দাতে পাথর জমে তারা মধু খেতে পারেন।
আজকের এই পোস্টে আমি আপনাদের সাথে মধু খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা জানাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আশা করছি আজকের আর্টিকেলে সে সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দিতে পেরেছি। এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকলে তা কমেন্ট করে জানাতে পারেন আপনি কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন আমাদের এই পৌষ্টের মাধ্যমে…..

সুপ্রিয় দর্শক আপনাকে স্বাগতম জানাচ্ছি আপনারা যারা বিভিন্ন সমস্যা নিরাময় করার জন্য বিভিন্ন বড় বড় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলো এবং বড় বড় ডাক্তারদের পরামর্শ গ্রহণ করতে চাচ্ছেন তাদের জন্য সকল ডাক্তারের পরামর্শ ও মতামত এবং সময় চিকিৎসা বিষয়ে সকল তথ্য সংগ্রহ করে আপনাদের কাছে আমি উপস্থাপন করব।