ওজন কমানোর সহজ ৬ টি উপায় এবং বিস্তারিত আলোচনা

শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমানোর কথা চিন্তা করলে প্রথমেই যে কথাটা মাথায় আসে সেটা হচ্ছে ডায়েট। সুস্থ সুন্দর রোগমুক্ত জীবন আমরা সবাই চাই, আর সুস্থ থাকার সবচেয়ে প্রধান উপায় হল শরীরের কাম্য ওজন বজায় রাখা। ওজন বেড়ে গেলে যেকোনো রোগের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। একটু ইচ্ছে আর সামান্য ধৈর্য থাকলেই তা সম্ভব। আর তা যদি ঘরোয়া উপায়ে হওয়া যায়, তাহলে তো মন্দ হয় না,  কী বলুন? এই পদক্ষেপের মধ্যে শুধু খাবার নিয়ন্ত্রণই নয়, পুরো জীবনযাপনকেই একটা অভ্যাসের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। তাহলেই কম সময়ে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য মিলবে।  অল্পবয়সী ছেলেমেয়েরা এখন অনেকেই ওজন কম রাখাকে একটি ফ্যাশন হিসেবে মনে করে থাকে। আমরা ৬ টি প্রধান উপায় নিয়ে আলোচনা করব যা সঠিক উপায়ে ওজন কমাতে সাহায্য করে।

খাদ্য তালিকায় পরিবর্তন

মাসে সাত কেজি ওজন কমাতে হলে প্রথমেই আপনাকে খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনতে হবে। যখন বেছে নেওয়ার মতো আরও কিছু থাকে তখন লোকেরা আরও বেশি খায়, তবে ফল এবং শাকসবজি বেশি থাকা ডায়েট কমানোর অন্যতম সেরা উপায়। প্রয়োজনের তুলনায় কম খাবার গ্রহণ করলে ধীরে ধীরে বিপাক ক্রিয়া স্লো হতে থাকে। আবার দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকলে একবারে বেশি খাওয়া হয়ে যায়। যেদিন থেকে ওজন কমানোর কথা ভাববেন, সেদিন প্রথমেই কী কী খাবেন এবং কখন খাবেন, তার একটা তালিকা বানিয়ে নিন। জল এবং ফাইবার সামগ্রীর কারণে, কম ক্যালোরি খাওয়ার সময় আপনি পূর্ণ বোধ করতে পারেন। এগুলি রান্না করার সময় আপনি যদি কোনও তেল ব্যবহার না করেন তবে সেগুলি আরও ভাল হয়ে উঠবে। ডিম, বাদাম ও বীজ জাতীয় খাদ্য বিপাক বৃদ্ধি করে। তবে কখনই কার্বোহাইড্রেড বাদ দিয়ে শুধু প্রোটিন জাতীয় খাবার গ্রহণ নয়।

ব্যায়াম করা

দ্রুত ওজন কমানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ আরেকটি উপায় হচ্ছে ব্যায়াম। ব্যায়াম আমাদের শরীরকে যেমন ফিট রাখে, ঠিক তেমনি আমাদের ওজন কমাতেও সাহায্য করে। আপনি যদি ভাবছেন কীভাবে দ্রুত ওজন কমানো যায়, প্রথম পদক্ষেপটি হবে প্রতিদিন ব্যায়ামের জন্য কিছু সময় বের করা। এটি প্রতিদিন প্রায় 30 মিনিট হাঁটার মতো সহজ কিছু দিয়ে শুরু করতে পারে যাতে ধীরে ধীরে এটি 45 মিনিটে বাড়ানো যায়। ওজন কমানোর জন্য সাঁতার কাটা ও সাইকেল চালানো আদর্শ ব্যায়াম। ব্যায়াম করার জন্য আপনাকে ঘরের বাইরে জিমনেসিয়ামে বা পার্কেই যেতে হবে, এমন কোনো প্রয়োজন নেই। কার্ডিওতে নিযুক্ত হওয়ার পরে হৃদরোগের ঝুঁকির কারণগুলি হ্রাস পেয়েছে বলে প্রমাণিত হয়েছে। তাছাড়া, এটি ওজন কমানোর প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে। আপনি ঘরের দৈনন্দিন কাজের মধ্যেই নিজের ব্যায়াম সেরে নিতে পারবেন। আপনাকে আপনার নিয়মিত ব্যায়ামের সময়সূচীর সাথে প্রতিদিন 100 ক্যালোরি কমানোতে সাহায্য করবে।

গ্রিন টি বা চা

গ্রিন টিতে রয়েছে এমন কিছু প্রাকৃতিক উপাদান, যা আমাদের ওজন কমাতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অনেক ধরনের চা আছে যা ওজন কমানোর জন্য সুপারিশ করা হয় এবং আপনি যদি ব্যায়াম ছাড়াই ওজন কমাতে চান, তাহলে ভালো চায়ে চুমুক দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন চার কাপ গ্রিন টি পান করলে প্রতি সপ্তাহে অতিরিক্ত ৪০০ ক্যালরি পর্যন্ত ক্ষয় করা সম্ভব। গ্রিন টি-তে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই চা জাদুকরী এবং এটি ভাল হজমে সাহায্য করে, মিষ্টির সাথে লড়াই করতে সাহায্য করে, আপনার হজমকে ত্বরান্বিত করে এবং আপনাকে ভাল ঘুমাতেও সাহায্য করে। এটাই আমাদের দেহের ওজন ঠিক রাখতে সাহায্য করে। ফলে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় গ্রিন টি অবশ্যই রাখুন।

পানি পান করা

পরিমাণমতো এক ঘণ্টা অন্তর অন্তর পানি পান করুন। পানি আপনার শরীর থেকে ক্ষতিকারক টক্সিন বের করে আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন। পানি পানের কারণে আপনার শরীর থেকে অতিরিক্ত টক্সিন বের করে দেওয়া সম্ভব হবে। এ ছাড়া পানি আমাদের ত্বক ও স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত পানি রাখুন এবং নিয়ম মেনে তা পান করুন। এতে আপনার শারীরিক ক্ষতি হওয়ার তেমন সম্ভাবনা থাকবে না। যেমন চুল পড়া, স্কিন বা ত্বক কুচকে যাওয়া, দূর্বল লাগা, মাথা ঘুরানো ইত্যাদি। তাই ওজন কমানোর জন্য কখনই নিজে নিজের খাবার কমানো বা কোনো ওষুধ খাওয়া  ঠিক না। 

পর্যাপ্ত ঘুম

আপনার ওজন এবং স্বাস্থ্যের জন্য আপনি যা করতে পারেন তার মধ্যে একটি হল প্রতি রাতে ভাল ঘুম। ওজন বৃদ্ধি এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা খারাপ ঘুমের মানের সাথে যুক্ত হয়েছে। দিনের বেলা ঘুমানোর অভ্যাস পরিহার করুন। মনে রাখবেন, অতিরিক্ত ঘুম আপনার শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তাই নিয়ম মেনে রাতে জলদি ঘুমাতে যান ও ভোরবেলা উঠে পড়ুন। আপনি যদি পর্যাপ্ত ঘুম না ঘুমান তবে আপনি ঘেরলিন এবং লেপটিন রাসায়নিক কম তৈরি করতে পারেন, যা ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে। রাতে আট ঘণ্টা ঘুমানো খুবই দরকার। কিন্তু কখনই দিনের বেলায় ঘুমাবেন না। এতে মুটিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। জন কমানোর অন্যতম সেরা উপায় হল পর্যাপ্ত সময় ঘুমানো।

বিভিন্ন ধরনের ফল

অধিক খাদ্য গ্রহণ, শারিরীক পরিশ্রম বা ব্যায়াম না করা, হরমোনের সমস্যা, ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া, দুশ্চিন্তা, খাবারের সঠিক সময় মেনে না চলা। এছাড়াও নানা কারণে ওজন বাড়তে পারে। তাই ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল আমলকিতে আছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম। এই ফল ক্ষুধামন্দা দূর করে, মুখের রুচি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এছাড়া সর্দি-কাশি কমাতে, ত্বক ও চুলের সৌন্দর্য ধরে রাখতেও সাহায্য করে আমলকি। তবে পেয়ারা খাওয়ার সময় সেটি পরিপক্ব কি না, তা খেয়াল রাখার পরামর্শ দিয়েছেন পুষ্টিবিদ নিশাত। কাঁচা পেয়ারা খেলে অনেক সময় হজমে অসুবিধা হয় এবং পরিপূর্ণ পুষ্টিগুণ থাকে না। সাধারণত প্রতি ২১ দিন থেকে ১ মাস অন্তর অন্তর করে প্রয়োজনীয় ক্যালরি চাট করে ডায়েট মেনে চলতে হয়। খাদ্যতালিকায় রাখুন বিভিন্ন রঙের সবজি বা ফল দিয়ে তৈরি সালাদ। এ সালাদের সঙ্গে টক দই মেশাতে পারেন। এতে উপকার পাবেন।

আজকের এই পোস্টে আমি আপনাদের সাথে  ওজন কমানোর সহজ উপায়  জানাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আশা করছি আজকের আর্টিকেলে সে সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দিতে পেরেছি। এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকলে তা কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আপনি মেয়েদের চুল পড়ার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন আমাদের এই পৌষ্টের মাধ্যমে…..

Leave a Comment