খাওয়ার রুচি বৃদ্ধির উপায় এবং রুচি বৃদ্ধির ৫টি পদ্ধতি

মানসিক ও শারীরিক অসুস্থতাসহ নানা কারণে মানুষের ক্ষুধা কমে যেতে পারে বা রুচি নষ্ট হতে পারে। জীবনে একবারও অরুচিতে ভুগেননি, এমন মানুষ কমই আছে। বেশির ভাগ সময়ই জ্বরের একটা উপসর্গ হিসেবে এটা হয়ে থাকে। বিভিন্ন কারণে খাবারে রুচি কমে যায়। হতে পারে তা মানসিক অস্থিরতা, বিষণ্ণতা, জন্ডিস, জ্বর, পাকস্থলীর বা অন্ত্রের সমস্যা ইত্যাদি কারণে। আমাদের প্রতিদিনই বেঁচে থাকার জন্য খেতে হয়। এই খাওয়া পরার জন্যই বিশেষত আমাদের প্রাণান্তকর চেষ্টা। 

নিজের ও পরিবারের খাদ্য জোগাড় করতে কতজনের কত রকম পরিশ্রম করতে হয়। পুষ্টিকর খাবারের চেয়ে অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়েই শিশু তার পেট ভরিয়ে রাখতে পছন্দ করে। পাকস্থলীর বা অন্ত্রের সমস্যায়, অম্লতায়, সংক্রমণ বা ক্যানসারের কারণে বিশ্রি ধরনের অরুচি হয়। কিডনির রোগীদেরও একই সমস্যা। নানা ধরনের ওষুধে রুচি কমে যেতে পারে। কিন্তু জ্বর সেরে যাওয়ার কিছুদিন পরও যদি এ সমস্যা সেরে না যায় এবং কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত থাকে, তাহলে আর অপেক্ষা না করে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। খাবারে রুচি ফিরিয়ে আনাটা সুস্থ থাকার জন্য অত্যন্ত জরুরী। তাই জেনে নিন ৫টি পদ্ধতি যা অনুসরণ করলে খাবারের রুচি বাড়বে।

পছন্দের খাবার; সাধারণত এদেশের মানুষ খুব একটা পছন্দের না হলেও বাসায় যা রান্না হয় তা ই খেয়ে নেয়। কিন্তু স্বল্প রুচির ব্যক্তিদের পক্ষে এ ব্যাপারটা বেশ কঠিন। মানে খাবারের স্বাদ কেবল নয়, গন্ধ, রং ও চেহারাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। তাই খাদ্য প্রস্তুতের সময় খাবারের চেহারার দিকে মনোযোগ দিন। তাই দৈনিক খাদ্য তালিকায় রাখুন আপনার পছন্দের খাবারগুলোই। তবে সে খাবারগুলো যদি ফ্যাট যুক্ত, তেলে ভাজা হয়ে থাকে তবে পরিমাণের দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখুন।

পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার; যাঁরা বেশি খেতে পারছেন না বা খেতে ইচ্ছে করে না, তাঁরা এমন খাবার বেছে নিন, যা কম খেলেও বেশি পুষ্টি দেবে। যেমন, শাকসবজি বা ফলমূল, গোটা শস্য, বাদাম, বীজজাতীয় খাদ্য এবং আমিষ। যেমন মাখন দিয়ে ডিম রান্না করতে পারেন, পানির পরিবর্তে দুধ দিয়ে ওটমিল রান্না করতে পারেন, সালাদে জলপাই তেল এবং অ্যাভোকাডো যোগ করতে পারেন ইত্যাদি।  বিজ্ঞানীরা বলছেন, দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার এবং মাছ ও মুরগির আমিষ মস্তিষ্কের খিদে কেন্দ্রকে উজ্জীবিত করে। একবারে বেশি পরিমাণে না খেতে পারলে বারবার অল্প পরিমাণে খান।

ভেষজ ও খনিজ; কিছু ভেষজ, মসলা বা ফল খাবারকে আরো আকর্ষণীয় করে, হজমে সহায়তা করে এবং পেট ফাঁপা কমিয়ে ক্ষুধা বাড়ায়। তাই খাবার তৈরির সময় এতে এমন মশলা ব্যবহার করুন যা সুঘ্রাণ তৈরি করে এবং স্বাদ বাড়িয়ে তোলে। ধনে পাতা, পুদিনা এসবও খাবারের সুঘ্রাণ এবং স্বাদ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। সেই সাথে বাড়িয়ে দেয় ক্ষুধা। এ জন্য খেতে পারেন মৌরি, হরীতকী, পুদিনা, কালো মরিচ, ধনে, আদা, দারুচিনি, আমলকী মাল্টা, লেবু ইত্যাদি।

শ্রম বা ব্যায়াম করুন; প্রতিদিন কিছু ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রম করুন। এতে মেটাবলিজম বাড়বে এবং খিদে বাড়বে। শারীরিক ক্রিয়াকলাপ আপনাকে আরো ক্যালরি পোড়াতে, বিপাকীয় হার এবং হরমোন উৎপাদন বাড়িয়ে ক্ষুধাকে উদ্দীপিত করতে পারে। একা একা খাওয়ার তুলনায় পছন্দের সঙ্গী বা বন্ধুবান্ধব থাকলে খাবারের রুচি বাড়ে এটা পরীক্ষিত সত্য।  এ জন্য অলস বসে না থেকে ব্যায়াম করুন বা কায়িক শ্রম দিন। দেখবেন ক্ষুধা বেড়ে গেছে।

শাকসবজি; ভিটামিন পাবেন গাঢ় পাতাবহুল সবজি যেমন শাক, সরিষাশাক, বাঁধাকপি, বিট, বীজজাতীয় শস্য ইত্যাদিতে। এ ছাড়া পাবেন কলিজা ও কমলার রসেও। সূত্র: ওয়েবমেড, লিভস্ট্রং, এবিসি হেলথ। সর্দি কাশি বা শ্লেষ্মা বিকেলে মুখে অরুচি হলে তেলাকুচার পাতা একটু সিদ্ধ করে পানিটা ফেলে দিয়ে অল্প ঘি দিয়ে শাকের মতো রান্না করে খেলে অরুচি ভালো হয়ে যায়। ধনে ভেজে মিহি গুঁড়ো করে ১-২ গ্রাম মাত্রায় অল্প লবণ ও মরিচের সাথে মিশিয়ে খেলে অরুচি চলে যায়।

আজকের এই পোস্টে আমি আপনাদের সাথে খাওয়ার রুচি বৃদ্ধির উপায় উপায়  জানাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আশা করছি আজকের আর্টিকেলে সে সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দিতে পেরেছি। এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকলে তা কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আপনি মোটা হওয়ার সহজ উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন আমাদের এই পৌষ্টের মাধ্যমে…..

Leave a Comment