ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করার ৫টি প্রাকৃতিক উপায়

ডায়াবেটিস সাধারণ পরিভাষায় চিনি নামেও পরিচিত একটি ব্যাধি যা রক্তের গ্লুকোজ প্রক্রিয়া করার জন্য শরীরের ক্ষমতাকে ব্যাহত করে। ডায়াবেটিস যেহেতু অসংক্রামক ব্যাধি তাই এর সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ জানা যায়নি। মানবদেহে যখন ইনসুলিন নামের হরমোনের ঘাটতি হয় অথবা ইনসুলিন কার্যকরভাবে শরীরে ব্যবহৃত হয় না কিংবা নিষ্ক্রিয় থাকে, তখন রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যায়।  নিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রায় এই রোগ আটকানো প্রয়োজনীয় পরিবর্তন , স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, শারীরিক পরিশ্রম, নিয়মিত চেকআপ, ওজন নিয়ন্ত্রণের মতো বিষয়গুলোর প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। সমস্যায় পড়লে অবিলম্বে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। প্রচুর পরিমাণে সবুজ শাকসবজি, ফলমূল, মাছ, কম চর্বি ও কম শর্করাযুক্ত খাদ্য গ্রহণে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। কায়িক শ্রমের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। নগরায়ণ ও পরিবর্তিত জীবনধারণের কারণে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে জীবনযাপনের ধরন পাল্টাতে হবে।

ডায়াবেটিস প্রতিরোধের উপায় সমূহ

ডায়াবেটিসের জটিলতাগুলো রোগের প্রাথমিক ধাপ থেকেই শুরু হয়। সঠিক সময়ে রোগ নির্ণয় তাই ডায়াবেটিসের চিকিৎসা ও জটিলতা প্রতিরোধের অন্যতম পূর্বশর্ত।  ওষুধের ব্যবহার ছাড়া শুধুমাত্র ব্যায়াম, খাদ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। এক ঝলকে দেখে নিন কী খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

নিয়মিত ব্যায়াম; শরীরচর্চা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। শারীরিক কার্যকলাপ সাধারণ স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে যদি আপনি একটি অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করেন। আপনার সময়সূচীতে একটি দৈনিক ফিটনেস রুটিন যোগ করুন। এই একটা মাত্র রোগেই আমরা শরীরচর্চা বা ব্যায়ামকে ওষুধ হিসাবে দেখে থাকি। কারণ একজন ডায়াবেটিসের রোগী যখন হাঁটতে শুরু করেন বা ব্যায়াম করতে শুরু করেন তখন তার শরীরের ইনসুলিন এর কার্যকারিতা কমে যায়। নিয়মিত শরীরকে সচল রাখতে হবে। হাঁটা উত্তম উদাহরণ হতে পারে। একটি কার্যকলাপ চয়ন করুন, যেমন হাঁটা, জগিং, সাঁতার কাটা বা যেকোনো ধরনের খেলাধুলা। কাজের ডিউটির মধ্যে পাঁচ থেকে দশ মিনিট হাঁটুন।

ধূমপান পরিহার করুন; আপনি যদি ডায়াবেটিস থেকে বাঁচতে চান, তবে এখনই ধূমপান বন্ধ করুন। ধূমপান কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেয় ডায়াবেটিসের প্রবণতা। যারা প্রায়ই সিগারেট খান তাদের ইনসুলিন প্রতিরোধের বিকাশ হতে পারে, যা টাইপ-২ ডায়াবেটিসের পূর্বসূরী। আপনার নিকোটিন আসক্তি ত্যাগ করুন কারণ ধূমপানের কোন উপকারিতা নেই। স্ট্রেসের মতোই ধুমপানও নানা ধরনের মারাত্মক রোগের আরেকটি কারণ। ফুসফুস ক্যান্সার এর মতো ভয়ঙ্কর রোগের পাশাপাশি ডায়াবেটিসেরও একটি কারণ ধুমপান।

অতিরিক্ত ওজন কমান; আপনার খাদ্য পরিবর্তন এবং আরও ব্যায়াম করা আপনাকে আপনার শরীরের ওজনের প্রায় 7% কমাতে সাহায্য করতে পারে, যা আপনার ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় 60% কমাতে পারে। দেহের ওজন স্বাস্থ্যকর মাত্রায় নিয়ন্ত্রিত রাখার মধ্য দিয়ে শুধু ডায়াবেটিসই নয় বরং আরো নানা ধরনের রোগ বালাই থেকে মুক্ত থাকা যায়। নিজেকে ক্ষুধার্ত থাকা বা আপনি অনলাইনে পড়া ডায়েট প্রোগ্রামগুলি অনুসরণ করা এড়িয়ে চলুন। একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য খাওয়া এবং, আরও ভাল, আপনার ডাক্তার বা পুষ্টিবিদদের কাছ থেকে কী খাবেন সে সম্পর্কে পরামর্শ নেওয়া হল।

দারুচিনি খান; যাদের টাইপ ২ ডায়াবেটিস আছে তাদের জন্য দারচিনি খুবই উপকারী। এটি অগ্নাশয়ের ইনসুলিন উৎপাদনের প্রক্রিয়াকে উদ্দীপ্ত করে এবং রক্তের সুগার লেভেল কমায়। দারচিনির গুঁড়া চা, পানি বা অন্য পানীয়ের সঙ্গে মিশিয়ে পান করতে পারেন। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, দারুচিনির আছে অস্বাস্থ্যকর কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইড এর মাত্রা কমিয়ে আনার প্রাকৃতিক সক্ষমতা। আর এই দুটি উপাদান প্রাকৃতিক ভাবে কমিয়ে আনতে পারলে রক্তে সুগারের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।

চিনি এড়িয়ে চলুন;  মানবদেহে চিনির উচ্চ মাত্রার প্রভাব মারাত্মক। পরিশ্রুত কার্বোহাইড্রেট এবং চিনিতে ভারী পণ্য গ্রহণ করলে রক্তে শর্করা এবং ইনসুলিনের মাত্রা বেড়ে যায়, যা সময়ের সাথে সাথে ডায়াবেটিস হতে পারে। ডায়াবেটিস সাধারণ পরিভাষায় চিনি নামেও পরিচিত একটি ব্যাধি যা রক্তের গ্লুকোজ প্রক্রিয়া করার জন্য শরীরের ক্ষমতাকে ব্যাহত করে।

আজকের এই পোস্টে আমি আপনাদের সাথে ডায়াবেটিস প্রতিরোধের উপায় জানাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আশা করছি আজকের আর্টিকেলে সে সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দিতে পেরেছি। এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকলে তা কমেন্ট করে জানাতে পারেন।আপনি ওজন কমানোর সহজ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন আমাদের এই পৌষ্টের মাধ্যমে…

Leave a Comment