ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট খোলার নিয়ম এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

বর্তমান বিশ্বে আমরা সকলেই ব্যাংকের সাথে জড়িত থাকে কমবেশি আমাদের সবারই একটি করে ব্যাংক একাউন্ট থাকে আবার দেখা যায় অনেকের আরো বেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এর প্রয়োজন হয়ে থাকে আমাদের অনেকেরই পছন্দের ব্যাংক হল ইসলামী ব্যাংক যার রয়েছে অনেক সুনাম ও ধর্মীয় রীতি-নীতি মেনে ইসলামী ব্যাংক পরিচালনা হয়ে থাকে আর আমরা অনেকেই চিন্তা করি যে আমরা কিভাবে ইসলামী ব্যাংকে একটি একাউন্ট খুলব এবং আমাদের কি কি প্রয়োজন হবে অথবা কোন ধরনের অ্যাকাউন্ট একটি মানুষের জন্য উপযুক্ত হবে সেটাই নিয়ে আপনাদের সাথে আজকে আলোচনা করব কিভাবে আপনি একটি ইসলামী ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট খুলবেন।

ইসলামী ব্যাংক একাউন্টের প্রকারভেদ

বাংলাদেশের সকল সরকারি ব্যাংকগুলোর প্রকারভেদ একই রকম এবং বাংলাদেশ ইসলামী ব্যাংকের তিন প্রকারের একাউন্ট খোলা যায় যা আপনি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি ব্যাংকের একই আইন বা নিয়ম নিচে তিন প্রকার ইসলামী ব্যাংক একাউন্টের নাম উল্লেখ করা হল-

  • ইসলামী ব্যাংক কারেন্ট একাউন্ট
  • ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট
  • ইসলামী ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট

ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম

আপনি যদি ইসলামী ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট খুলতে চান তাহলে দুই ভাবে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন প্রথমত অনলাইন এর মাধ্যমে ঘরে বসে থেকেই আপনার মোবাইল ল্যাপটপ বা কম্পিউটারের মাধ্যমে আপনি ইসলামী ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন অথবা আপনি আপনার নিকটস্থ ইসলামী ব্যাংকের শাখায় গিয়ে আপনাকে একাউন্ট খুলতে হবে প্রথমে আপনাকে জানাবো কিভাবে আপনি ব্যাংকে গিয়ে আপনার ইসলামী ব্যাংক খুলবেন।

ইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট

ইসলামী ব্যাংকের সেভিং একাউন্ট সবচাইতে জনপ্রিয় একটি একাউন্ট যার মাধ্যমে আপনি টাকা জমা ও উত্তোলন করতে পারবেন যেকোনো সময় এবং আপনি এই টাকা থেকে লভ্যাংশ পাবেন যা ইসলামী শরিয়া আইন অনুযায়ী এই জন্য ইসলামী ব্যাংকের সেভিং একাউন্ট সবচাইতে একটি জনপ্রিয় একাউন্ট হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে সেভিং একাউন্ট খুলতে সাধারণত তিন চার রকমের অ্যাকাউন্ট খোলা যায় ব্যবসায়িক সেভিং একাউন্ট সঞ্চয় সেভিং একাউন্ট ইত্যাদি আপনি যদি একটি সি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে চান তাহলে আপনার প্রয়োজন হবে কিছু ডকুমেন্ট ও কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য সেটা বিস্তারিত নিচে দেওয়া হল

  • সর্বপ্রথম আপনাকে ইসলামী ব্যাংকে গিয়ে আপনাকে একটি  ব্যাংক একাউন্ট ওপেনিং আবেদন ফরম নিতে হবে।
  • আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা জন্ম নিবন্ধনের ফটোকপি অথবা যদি আবেদনকারীর বয়স ১৮ না হয়ে থাকে তাহলে তার অভিভাবকের পরিচয় পত্রের এক কপি ফটোকপি দেওয়া লাগবে।
  • আবেদনকারীর সদ্যতলা দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
  • আবেদনকারীর একাউন্টে নমিনি ছবি ও জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি অথবা জন্ম নিবন্ধনের এক কপি সাথে অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের সত্যায়িত করতে হবে।
  • আবেদনকারী স্বাক্ষর ও ফিঙ্গার প্রিন্ট।
  • আমাকে সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা ডিপোজিট করতে হবে।
  • যদি ব্যবসায়িক শিবিরের সেভিং একাউন্ট হয় তাহলে আপনার একটি টিন সার্টিফিকেট এর প্রয়োজন হবে।
  • এছাড়াও আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা স্কুল কলেজ যে কোন কিছুর সরকারি অনুমোদনের কাগজ লাগবে যেমন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হলে ট্রেড লাইসেন্স।
  • কোম্পানি হলে মেমোরেন্ডাম আর্টিকেল অব এসোসিয়েশন দ্বারা সত্যায়িত অনুলিপি থাকতে হবে সাথে।

ইসলামী ব্যাংক কারেন্ট একাউন্ট

আমরা যারা ব্যবসায়ী রয়েছি তাদের জন্য কারেন্ট অ্যাকাউন্ট খুবই প্রয়োজন কিন্তু আমরা অনেকেই না জানার কারণে আমাদের কারেন্ট একাউন্ট আমরা খুলতে পারি না তাই আজকে আপনাদের সাথে আলোচনা করব কিভাবে আপনি ইসলামী ব্যাংকে কারেন্ট একাউন্ট খুলবেন কারণ আপনি যদি ব্যবসা করে থাকেন তাহলে আপনার ইসলামী ব্যাংকের একটি কারেন্ট একাউন্ট থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কেননা কারেন্ট একাউন্ট এর ক্ষেত্রে আপনি যত খুশি তত লেনদেন এবং যত খুশি ততবারই জমা দিতে পারবেন এবং উত্তোলন করতে পারবেন তাই নিচে কিভাবে কারেন্ট একাউন্ট খুলবেন বিস্তারিত দেয়া হলো

  • সর্বপ্রথম আপনাকে ইসলামী ব্যাংকে গিয়ে আপনাকে একটি  ব্যাংক একাউন্ট ওপেনিং আবেদন ফরম নিতে হবে।
  • আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা জন্ম নিবন্ধনের ফটোকপি অথবা যদি আবেদনকারীর বয়স ১৮ না হয়ে থাকে তাহলে তার অভিভাবকের পরিচয় পত্রের এক কপি ফটোকপি দেওয়া লাগবে।
  • আবেদনকারীর সদ্যতলা দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
  • আবেদনকারীর একাউন্টে নমিনি ছবি ও জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি অথবা জন্ম নিবন্ধনের এক কপি সাথে অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের সত্যায়িত করতে হবে।
  • আবেদনকারী স্বাক্ষর ও ফিঙ্গার প্রিন্ট।
  • আপনাকে কারেন্ট একাউন্ট করতে হলে অবশ্যই একটি আপনার ব্যবসায়ী টিন  সার্টিফিকেট থাকতে হবে যার মাধ্যমে আপনি সরকারকে ট্যাক্স দিন এর প্রমাণ থাকে।
  • আপনার কারেন্ট একাউন্ট এর জন্য আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের একটি ট্রেড লাইসেন্স এর কপি ব্যাংকে জমা দেয়া লাগবে।
  • আপনাকে সর্বনিম্ন ১ হাজার টাকা ডিপোজিট করতে হবে।
  • কোম্পানি হলে মেমোরেন্ডাম আর্টিকেল অব এসোসিয়েশন দ্বারা সত্যায়িত অনুলিপি থাকতে হবে সাথে।

ইসলামী ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট

বর্তমানে ইসলামী ব্যাংক স্টুডেন্টদের জন্য বিশেষ করে কিছু সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে যদি কোন স্টুডেন্ট তাদের ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট ওপেন করে তাহলে এই স্টুডেন্ট সম্পূর্ণ ফ্রি এবং অনলাইন সকল লেনদেন একদম ফ্রি এবং এটিএম বুথে কোন প্রকার সার্ভিস এবং তারা একদিন থেকে আরেক ব্যাংকে লেনদেনের ক্ষেত্রে  চার্জ করবে না এ সকল কারণেই ইসলামী ব্যাংকের স্টুডেন্ট একাউন্ট এখন খুবই জনপ্রিয় এবং এখানে ইচ্ছা করলে তার স্কলারশিপ বা পড়াশোনার জন্য এখানে টাকা সঞ্চয় করতে পারবে এখন আপনাদেরকে আমি জানাবো কিভাবে আপনি একটি ইসলামী ব্যাংকে স্টুডেন্ট একাউন্ট ওপেন করবেন।

  • সর্বপ্রথম আবেদনকারীকে তার নিকটস্থ ব্যাংকে যেতে হবে এবং সেখান থেকে আবেদন ফরম উত্তোলন করতে হবে।
  • আবেদনকারীকে তার স্কুল কলেজ এর কার্ড অথবা এনআইডি কার্ড অথবা জন্ম নিবন্ধনের ফটোকপি প্রদান করতে হবে।
  • অভিভাবকের জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি।
  • আবেদনকারী ও অভিভাবকের দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
  • আবেদনকারীর স্বাক্ষর ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট।
  • সর্বনিম্ন ১০০ টাকা ডিপোজিট করতে হবে।

ইসলামী ব্যাংক একাউন্টে পাবেন অনেক বেশি সুযোগ-সুবিধা। বিশেষ করে স্টুডেন্ট ব্যাংক ও সেভিংস একাউন্টে দারুন সকল সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। এছাড়াও দেশের বৃহত্তম ব্যাংকগুলোর মধ্যে ইসলামী ব্যাংক অন্যতম। যার ফলশ্রুতিতে দেশের যেকোন জায়গায় ইসলামী ব্যাংকের শাখা ও ATM বুথ পাবেন। ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট করার প্রসেস অনেক সহজ। এই ব্যাংকে স্টুডেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য সর্বনিম্ন মাত্র ১০০ টাকা প্রাথমিক ডিপোজিট করা প্রয়োজন। ও অন্যান্য ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য ৫০০ টাকা প্রাথমিক ডিপোজিট করা প্রয়োজন।

আজকের এই পোস্টে আমি আপনাদের সাথে ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট খোলার নিয়ম  জানাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আশা করছি আজকের আর্টিকেলে সে সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দিতে পেরেছি। এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকলে তা কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আপনি চেক লেখার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন আমাদের এই পৌষ্টের মাধ্যমে ……

Leave a Comment