থাইরয়েড সমস্যা থেকে মুক্তির ঘরোয়া উপায়

মানুষের শরীরের জন্য থাইরয়েড হরমোনেরও একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় থাকা জরুরি। পৃথিবীতে অন্তত ১২ শতাংশ মানুষ থাইরয়েডজনিত সমস্যায় ভোগেন। মানুষের গলার সামনের দিকে প্রজাপতি আকৃতির গ্রন্থিটির নাম থাইরয়েড। হাইপোথাইরয়েডিজম এবং হাইপারথাইরয়েডিজম দুটি সাধারণ থাইরয়েড রোগ যা আমরা কিভাবে শক্তি তৈরি এবং ব্যবহার করি তার ওপর প্রভাব ফেলে। আর যখন থাইরয়েডে হরমোনগুলি অস্বাভাবিক উত্পাদন হয়ে তখনই সমস্যার সৃষ্টি হয়ে। এ রোগে শুধু ওষুধ খেলেই হয় না যথেষ্ট পরিমাণ পুষ্টিকর খাবারও খেতে হয়। থাইরয়েড যেহেতু হরমোনের ভারসাম্যকে নষ্ট করে এ কারণে এই সমস্যা থাকলে বেশ কিছু খাবার খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দেওয়া উচিত।

  • থাইরয়েড গ্ল্যান্ডের অন্তক্ষরা গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হয় থাইরয়েড হরমোন। এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা হরমোন। পুষ্টিবিদরা বলছেন, প্যাকেটজাত খাবার বা প্রসেস খাবার থেকে দূরে থাকা উচিত। যেমন- বিস্কুট, চিপস, মাল্টি গ্রেইন ইত্যাদি প্রক্রিয়াজাত খাবারে প্রচুর পরিমাণে প্রিজারভেটিভ, লবণ ও সোডিয়াম দেওয়া থাকে।থাইরয়েড হরমোন শরীরের নানা কাজে লাগে। এই হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হলে শরীর ঠিক করে কাজ করতে পারে না। তাই যাঁদের থাইরয়েডের সমস্যা আছে, তাঁদের নিয়মিত ওষুধ খেতে হয়। দ্রুত নাড়িস্পন্দন এমনকি এলোমেলো নাড়িস্পন্দন এট্রিয়াল ফিব্রিলেশন হতে পারে। এ থেকে হৃৎপিণ্ড বিকল হয়ে যেতে পারে।
  • থাইরয়েডের সব থেকে সাধারণ লক্ষণ হচ্ছে ক্লান্তি। থাইরয়েড হরমোন মূলত শরীরে শক্তি জোগান দেয়। আপনি যদি অতিরিক্ত ক্লান্তি অনুভব করেন, তাহলে তা থাইরয়েড হওয়ার লক্ষণ হতেই পারে।এগুলো স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর এবং নিয়মিত এগুলো খাওয়ার ফলে শরীরে অনেক খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে।হার্টের রোগ থাকলে থাইরোটক্সিকোসিস সেটিকে আরও উসকে দেয়। সামান্য হাঁটলেই হৃৎপিণ্ডে অক্সিজেনের প্রবাহ কমে আসে। চিকিৎসকের পরামর্শ ওষুধ খাওয়ার পাশাপাশি কয়েকটি সাধারণ খাবার খেলে এই সমস্যা কমতে পারে। থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে পাউরুটি, পাস্তা ধরনের খাবার থেকে দূরে থাকা উচিত।
  • অগোছালো জীবনযাপন পরিহার জীবনযাত্রা ঠিক করতে হবে। বর্তমানে এত এত শারীরিক ও মানসিক সমস্যা হওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে এটি। শরীরে চর্বি হলে থাইরয়েড গ্ল্যান্ডে হরমোন তৈরিতে বাধা দেয়। তাই অতিরিক্ত ফাস্ট ফুড, মাখন, তেলেভাজা খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। রোজ রাতে নিয়ম করে কয়েকটি কাজু খান। এগুলি আগে থেকে ভিজিয়ে রাখলে ভালো হয়। কাজুতে সেলেনিয়াম নামের উপাদান থাকে। এটি থাইরয়েডের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। শরীরের বিপাক নিয়ন্ত্রণে থাইরয়েড গ্রন্থি বিশেষ ভূমিকা পালন করে, সে জন্য সময় নিয়ে খাবার চিবিয়ে খেলে তা বিপাক ক্রিয়া বাড়াতে বিশেষভাবে সাহায্য করে।
  • নারকেল তেল গরম না করে ব্যবহার করলে তা ওজন কমাতে এবং বিপাকীয় ক্রিয়া বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। নারকেল তেলে যে ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে তা থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতা। আপনার দৈনন্দিন খাবারে চিয়া বীজ, ব্রাজিল বাদাম, পেঁয়াজ, রসুন এবং সিলিন্টার ইত্যাদি গ্রহণ করে এই প্রক্রিয়াটি ব্যবহার করার একটি সহজ উপায়। সয়াবিন খাওয়া বাদ দিন কারণ এতে থাকা আইসোফ্ল্যাভিন থাইরয়েডের ক্ষেত্রে সমস্যার কারণ হতে পারে।
  • গবেষকেরা বলেন, কিছু শাকসবজি আছে যেমন, বাঁধাকপি, ব্রকলি, ব্রাসেলস স্প্রাউট, ফুলকপি ইত্যাদি এগুলো কাঁচা অবস্থায় খাওয়া ঠিক নয়।  এগুলো কাচা খেলে থাইরয়েড গ্রন্থির কাজ ব্যাহত হয়ে থাকে এবং থাইরয়েড গ্রন্থির ভারসাম্য নষ্ট হয়। পালং শাক কমবেশি বাজারে উপলব্ধ থাকে। এই সবজি নিয়মিত খেলে শরীরে বিটা ক্যারটিনয়েডেল জোগান ঠিক থাকে। ফলে ক্যানসারের মতো কঠিন রোগকেও দূরে রাখা যায়।

এছাড়াও থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে ফুলকপি, ব্রকলি, বাঁধাকপি খাওয়া বাদ দিতে হবে। এছাড়া মিষ্টি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার, কফি, অ্যালকোহল, কোমল পানীয় পরিহার করতে হবে। পাশাপাশি অবশ্যই প্রতিদিন নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে। তিন ধরনের চিকিৎসা রয়েছে। ওষুধ, শল্য ও রেডিও আয়োডিন চিকিৎসা। রোগীর বয়স, লিঙ্গ, রোগের কারণ ও প্রকৃতির ওপর নির্ভর করে চিকিৎসার ধরন। ক্ষেত্রবিশেষে দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা নিতে হয়। বারবার ফলোআপের দরকার হয়।

আজকের এই পোস্টে আমি আপনাদের সাথে থাইরয়েড সমস্যা থেকে মুক্তির উপায় জানাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আশা করছি আজকের আর্টিকেলে সে সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দিতে পেরেছি। এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকলে তা কমেন্ট করে জানাতে পারেন।আপনি গলা ব্যাথার ঔষধ কি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন আমাদের এই পৌষ্টের মাধ্যমে…..

Leave a Comment