জ্বর কমানোর পাঁচটি ঘরোয়া উপায় এবং বিস্তারিত আলোচনা

প্রকৃতির পরিবর্তনের সঙ্গে আমাদের শরীর দ্রুত মানিয়ে নিতে না পারলে একটু-আধটু অসুখ দেখা দিতেই পারে। শিশু থেকে বৃদ্ধ, কারও যেন রেহাই নেই। প্রথম কথা হলো, কোনো ধরনের অসুস্থায়ই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবন করা যাবে না। দ্বিতীয়ত, জ্বরের ক্ষেত্রে থাকতে হবে আরও বেশি সতর্ক। এ ছাড়া আমাদের শরীর একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রা পর্যন্ত জ্বর নিজেই প্রতিরোধ করতে পারে। তবে চিন্তিত না হয়ে প্রথমে মেনে চলতে পারেন ঘরোয়া কিছু উপায়। এরপরও জ্বর না সারলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।

মাথায় পানিপট্টি; জ্বর হলে শরীরের অতিরিক্ত তাপমাত্রা কমানোর অন্যতম কার্যকরী পদ্ধতি হলো জলপট্টি দেওয়া। সেজন্য একটি পরিষ্কার রুমাল ভাঁজ করে সেটি পরিষ্কার পানিতে ভিজিয়ে নিন। এরপর ভেজা রুমালটি রোগীর কপালের উপর দিয়ে রাখতে হবে। এভাবে মিনিট দুয়েক পর রুমালটি পুনরায় ভিজিয়ে একইভাবে কপালের উপর দিয়ে রাখতে হবে। বাড়িতে কাউকে ঠান্ডা জলে কাপড় ভিজিয়ে মাথায় দিতে বলুন। বহু যুগ ধরে ভারতীয়রা এই পন্থা অবলম্বন করে আসছেন।

মধু ও তুলসিপাতা; জ্বরের মতো সমস্যায় মধু বেশ উপকারী। অসুখে মধুর ব্যবহার বেশ পুরনো। মধু আর তুলসীপাতা গলার কফ পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। জ্বর উপশমে যষ্টিমধুও বেশ কার্যকরী, কারণ এটি অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল এবং এটি অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান সমূহে ভরপুর। এটি আমাদের শরীরের যেকোনো ধরনের ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। মধু আর তুলসীপাতা গলার কফ পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। সর্দি-কাশি হলে প্রতি সকালে মধু আর তুলসিপাতা একসঙ্গে খেয়ে নিন। কিছুক্ষণ পরেই গলা পরিষ্কার হয়ে যাবে। বেশ আরাম মিলবে।

আদা চা;  আদার চা জ্বর কিংবা সর্দি-কাশি থেকে সহজে মুক্তি দেয়। আদা চা তৈরি করতে হলে চায়ের লিকারের মধ্যে চিনি ও আদার ছোট ছোট কুচি মেশান।  আদা চা যেকোনো হারবাল চা খুবই উপকারী। কারণ, এগুলোর আছে অ্যান্টিভাইরাল ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল কার্যকারিতা। চাইলে মেশাতে পারেন লেবুর রস। এটা চায়ের ভিটামিন-সি যোগ করে। এই আদা চা খেলে দুর্বলতা কেটে শরীরকে সুস্থ ও সতেজ করে তোলে।

বিশ্রাম নেওয়া; জ্বর অনুভূত হলে বাড়ি থেকে কোথাও না বেরিয়ে বাড়িতেই বিশ্রাম নিন। এতে সংক্রমণের আশঙ্কা কমে। জ্বর থেকে সেরে উঠতে আপনার ভালোভাবে বিশ্রাম নেওয়া জরুরি। এটাও বলা যেতে পারে যে শীতল পরিবেশে থাকা এবং হালকা পোশাক পরা সহায়ক হতে পারে। এই সময় শরীর যথেষ্ট দুর্বল থাকে। তাই ঠিকঠাক বিশ্রাম নিতে প্রয়োজন পর্যাপ্ত ঘুমের। বাড়িতে চেষ্টা করুন পর্যাপ্ত ঘুমিয়ে নেয়ার। যদিও গবেষণাগুলি এই অবস্থায় প্রদত্ত ভেষজ এবং ঘরোয়া প্রতিকারের উপকারিতা দেখায়, তবে এগুলি অপর্যাপ্ত। সুতরাং, এগুলি শুধুমাত্র সতর্কতার সাথে নেওয়া উচিত এবং চিকিত্সার বিকল্প হিসাবে কখনই নয়।

ভিটামিন; জ্বরে কমলার রস ও অন্যান্য ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ ফলের রস খেলে অনেকটা উপকার পাওয়া যায়। ভিটামিন-সি ইমিউনিটি সিস্টেমকে ইনফেকশনের বিরুদ্ধে লড়তে সহায়তা করে। শরীরে বিভিন্ন ভিটামিনের অভাব হলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। তখন বাইরের রোগজীবাণু সহজেই শরীরকে আক্রমণ করতে পারে। তাই খাবারের একটি ঠিকঠাক তালিকা তৈরি করার চেষ্টা করুন যাতে শরীরে সব ধরনের ভিটামিন ঠিকমতো প্রবেশ করতে পারে।

জ্বর সময় দেহে পানিশূন্যতা ও ইলেকট্রোলাইটের যে অসমতা তৈরি হয়, তা পূরণে ডাবের পানির কোনো বিকল্প নেই। ককোয়া রসুন ও এককাপ গরম পানি নিন। রসুন কুচি করে নিয়ে গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখুন দশ মিনিট। এরপর রসুনের কুচিগুলো ছেঁকে নিয়ে পানিটুকু চায়ের মতো খেয়ে নিন। এভাবে দিনে দুইবার খেতে হবে।  বিশুদ্ধ পানি পানের পাশাপাশি ফ্রুট জুস বা স্যুপ জাতীয় খাবার খান নিয়মিত। তরল খাবার কফকে সহজে বুকে বসতে দেয় না। জ্বর হলে কুসুম গরম পানিতে গোসল করুন। তবে এই গোসল খুব দ্রুত করতে হবে, বেশি সময় নিয়ে করা যাবে না। এটি শরীরের তাপমাত্রা কমাতে সাহায্য করে।

আজকের এই পোস্টে আমি আপনাদের সাথে  জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়  জানাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আশা করছি আজকের আর্টিকেলে সে সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দিতে পেরেছি। এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকলে তা কমেন্ট করে জানাতে পারেন।আপনি সর্দি কাশি থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন আমাদের এই পৌষ্টের মাধ্যমে…..

Leave a Comment