গ্যাস্ট্রিক থেকে মুক্তির উপায় ১০টি ঘরোয়া উপায়

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কম-বেশি সবারই হয়। প্রতিদিনের ব্যস্ত জীবনে তাঁদের বিছানায় কাবু করে রাখে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা। তৈলাক্ত ও ভারী খাবারই মূলত এর জন্য দায়ী। শুরুতে সচেতন না হলে এ সমস্যা পরবর্তীতে আলসারে রূপান্তর হওয়ার আশঙ্কা থাকে। একটু ভাজাপোড়া অথবা দাওয়াত-পার্টিতে মশলাযু্ক্ত খাবার খেলেই শুরু হয়ে যায় গ্যাস্ট্রিকের অস্বস্তিকর সমস্যা। এর থেকে পরিত্রাণ পেতে সবাই হাত বাড়ান ওষুধের দিকে। গ্যাস্ট্রিকের কারণে হজমজনিত সমস্যা, পেট ফেঁপে থাকে যার কারণে পরিপাকক্রিয়ায় সমস্যা দেখা যায়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, এসব সমস্যার অন্যতম কারণ হলো বেশি খাওয়া, খুব দ্রুত খাওয়া এবং অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ। গ্যাস্ট্রিকের হাত থেকে নিস্তার পেতে জেনে রাখুন কিছু ঘরোয়া উপায়……

আলুর রস; গ্যাস্ট্রিক সমস্যা রোধ করার অন্যতম ভাল উপায় হল আলুর রস। আলুর অ্যালকালাইন উপাদান গ্যাস্ট্রিক সমস্যার লক্ষণগুলো রোধ করে থাকে। একটি বা দুটো আলু নিয়ে গ্রেট করে নিন। এর গ্রেট করা আলু থেকে রস বের করে নিন। এরপর আলুর রসের সাথে গরম পানি মিশিয়ে নিন।  প্রতি বেলায় খাবার ৩০ মিনিট আগে খেয়ে নিন আলুর রস। তবে অন্তত ২ সপ্তাহ পান করুন এই পানীয়।

আদা; আদা সব চাইতে কার্যকরী অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানসমৃদ্ধ খাবার। আদাতে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান আছে যা গ্যাস্ট্রিক সমস্যায় জ্বালাপোড়া হলে তা রোধ করতে সাহায্য করে। আদা কুচি করে পানি দিয়ে ফুটিয়ে নিন ১ কাপ হয়ে এলে এতে ১-২ চা চামচ মধু মিশিয়ে পান করুন, বেশ ভালো ও দ্রুত ফল পাবেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্যাসের সমস্যা সমাধান হবে।

রসুন; এসিডিটির সমস্যা হ্রাস করতে রসুনের কোনো বিকল্প হয় না বললেই চলে। এক্ষেত্রে এক কোয়া রসুন খেয়ে ফেললেই স্টমাকে অ্যাসিড ক্ষরণের মাত্রা স্বাভাবিক হতে শুরু করে। ফলে গ্যাস সংক্রান্ত বিভিন্ন উপসর্গ ধীরে ধীরে কমে যেতে শুরু করে।

পুদিনা পাতা; এক কাপ পানিতে ৫টি পুদিনা পাতা দিয়ে ফুটিয়ে খান। পেট ফাঁপা, বমিভাব দূর করতে এর বিকল্প নেই।

দই; দইয়ে ল্যাকটোব্যাকিলাস, অ্যাসিডোফিলাস ও বিফিডাসের মতো নানা ধরনের উপকারী ব্যাকটেরিয়া থাকে। এই সকল উপকারী ব্যাকটেরিয়া দ্রুত খাবার হজমে সাহায্য করে সেই সাথে খারাপ ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে। এতে করে দ্রুত খাবার হজম হয়, ফলে পেটে গ্যাস হওয়ার প্রবণতা কমে আসে। আপনি চাইলে কলা, দই ও মধু একসাথে পেস্ট করে খেতে পারেন দ্রুত গ্যাস্ট্রিক সমস্যা রোধ করার জন্য।

পানি; পানি পানের সুফলের কথা সবাই জানেন। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে দুই গ্লাস করে পানি পান করবেন, দেখবেন সারাদিন আর গ্যাস্ট্রিকের যন্ত্রণা সহ্য করতে হবে না। এ জন্য নিয়মিত প্রতিদিন অন্তত ছয় থেকে আট গ্লাস পানি পান করতে হবে।

পেঁপে; পেঁপেতে রয়েছে পেপেইন নামক এনজাইম যা হজমশক্তি বাড়ায়। আপনি যদি নিয়মিত পেঁপে খেয়ে থাকেন তাহলে এমনিতেই আপনার গ্যাসের সমস্যা দূর হয়ে যাবে।

কলা; যারা বেশি করে লবণ খান, তাদের গ্যাস ও হজমে সমস্যা হতে পারে। কলায় যে পটাশিয়াম থাকে, তাতে শরীরের সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের ভারসাম্য বজায় থাকে। নিয়মিত কলা খেলে গ্যাসের সমস্যা এমনিতেই দূর হয়ে যাবে। 

শসা; শসাতে রয়েছে ফ্লেভানয়েড ও অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান যা পেট ঠাণ্ডা রাখতে অনেক বেশি কার্যকরী। নিয়মিত খাবার সময় শসার সালাত যদি খান তাহলে আপনার গ্যাসের সমস্যা অতি তাড়াতাড়ি ভালো হয়।

ডাবের পানি; ডাবের পানিতে রয়েছে ফাইবার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা অনেকটাই দূর করতে সাহায্য করে। এতে রয়েছে ফাইবার, যা হজমশক্তি বাড়ায় এবং পাশাপাশি অ্যাসিডিটি কমায়। এছাড়া গ্যাসের সমস্যা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায় নিয়মিত ডাবের পানি খেলে। 

আজকের এই পোস্টে আমি আপনাদের সাথে গ্যাস্ট্রিক থেকে মুক্তির উপায় জানাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আশা করছি আজকের আর্টিকেলে সে সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দিতে পেরেছি। এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকলে তা কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আপনি ডায়াবেটিস প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন আমাদের এই পৌষ্টের মাধ্যমে…

Leave a Comment