প্রত্যয়ন পত্র হলো মানুষের জন্য একটি প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি কর্তৃক সত্যায়িত কপি। প্রত্যয়ন পত্র একটি মানুষের সম্পর্কে তার আচার আচরণ বিভিন্ন সম্পর্ক গুলোকে প্রবাহিত করা প্রত্যয়ন পত্র। তাই প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে আপনার অবশ্যই প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম জেনে রাখতে হবে। যদিও এখন ফরম্যাট করা থাকে, তবুও এমার্জেন্সি কারণে হাতে লেখার প্রয়োজন হতেই পারে।প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম জানানোর পাশাপাশি প্রত্যয়ন পত্র লেখার নমুনাও দেখাবো।
*প্রত্যায়ন পত্র কি?
*প্রত্যয়ন পত্রের জন্য আবেদন
*প্রত্যয়ন পত্র কত প্রকার
*প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম
*শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রত্যয়ন পত্র / কলেজ প্রত্যয়ন পত্র
*চাকরির প্রত্যয়ন পত্র / অফিসিয়াল প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম
আরো পড়ুন: অনলাইনে জমির খাজনা দেয়ার নিয়ম
প্রত্যায়ন পত্র কি?
প্রত্যয়ন পত্র মূলত এক ধরণের পত্র, যেখানে সরকারি কোন ধরণের গ্যাজেয়েট অফিসার কর্তৃক স্বাক্ষর করা হয়ে থাকে। মূলত প্রত্যয়ন পত্র আমাদের দৈনন্দিন জীবনে খুবই একটি গুরুত্বপূর্ণ পত্র। কারণ এই পত্রের মাধ্যমে আপনাকে ব্যক্তিজীবন কিংবা কর্মজীবনের অনেক কিছু নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। মূলত প্রত্যয়ন শব্দের অর্থ হল সত্যায়ন। মূলত আপনার ব্যক্তি জীবনের নানা ধরণের কাজের ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়ে থাকে। প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম সম্পর্কে জানখুন।
প্রত্যয়ন পত্রের জন্য আবেদন নিয়ম
সরকারী অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে বা সংগঠন রয়েছে যেখান থেকে প্রত্যয়ন পত্র নেওয়ার ক্ষেত্রে আবেদন পত্র লেখার দরকার পড়ে না। মৌখিকভাবে আবেদন করেও প্রত্যয়ন পত্র উত্তোলন করা যায়। এ বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি বা সংগঠনের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে।
বর্তমানে ইউনিয়ন পরিষদ, কাউন্সিলর, চারিত্রিক সনদ, নাগরিক সনদ প্রত্যয়নপত্রের জন্য অনলাইনে আবেদন করা যায়। আবেদন করার জন্য প্রত্যয়ন ওয়েবসাইটে গিয়ে একাউন্ট করতে হবে, তারপর নির্দিষ্ট প্রত্যয়নপত্রের জন্য সকল তথ্য দিয়ে আবেদন করতে হবে।
বিদ্যালয়ের প্রত্যয়ন পত্র, কলেজের প্রত্যয়ন পত্র, চাকরির প্রত্যয়ন পত্র, কোম্পানির প্রত্যয়ন পত্র ইত্যাদি পাওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠান প্রধানের বরাবর আবেদন পত্র লেখতে হয়। আবেদন পত্র পর্যালোচনা করে উক্ত প্রতিষ্ঠান থেকে প্রত্যয়ন পত্র প্রদান করা হয়।
প্রত্যয়ন পত্র কত প্রকার
- নাগরিক সনদ
- চারিত্রিক সনদ
- জন্ম নিবন্ধন ও ভোটার আইডি কার্ডের প্রত্যয়ন পত্র
- বিদ্যালয়ের প্রত্যয়ন পত্র / হাই-স্কুল প্রত্যয়ন পত্র
- কলেজ প্রত্যয়ন পত্র / শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রত্যয়ন পত্র
- চাকরির প্রত্যয়ন পত্র / অফিসিয়াল প্রত্যয়ন পত্র ইত্যাদি।
প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম
১. প্রত্যয়ন পত্র সর্বদা একটি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান প্রচলিত প্যাডে প্রিন্টেড অথবা লিখিত হতে হবে।
২. পত্রের শিরোনামে প্রত্যয়ন পত্র লিখাটি বিদ্যমান থাকতে হবে।
৩. যে ব্যক্তির প্রত্যয়ন পত্র প্রদান করা হবে তার নাম এবং পূর্ণ ঠিকানা পত্র উপস্থিত থাকবে।
৪. পত্রের মূল অংশ দুটি ভাগে বিভক্ত থাকবে যার মাধ্যমে পত্রের ভাব অর্থ প্রকাশিত হবে।
৫. তথ্য প্রদানকারী ব্যক্তির নাম এবং স্বাক্ষর থাকতে হবে।
৬. প্রত্যয়ন প্রদানকারী ব্যক্তি , সংগঠন বা প্রতিষ্ঠান সিল থাকতে হবে।
আরো পড়ুন: অঙ্গীকারনামা লেখার নিয়ম
নাগরিক সনদ প্রত্যয়ন পত্রের নমুনা
প্রত্যয়ন পত্র
তারিখ:
এই মর্মে প্রত্যয়ন করা যাচ্ছে যে, মোঃ ………………………, পিতা: ………………………., মাতা: …………………….., গ্রাম: ……………………………, পোস্ট অফিস: ………………, থানা: …………………….., জেলা: ……………………….। তিনি অত্যন্ত সরলতার সাথে তার উপর অর্পিত সকল দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে সম্পন্ন করেছেন। বর্তমানে তিনি একজন চাকরি প্রত্যাশী। আশা করি যে, তিনি ভবিষ্যতে যে চাকরি পাবেন তা তাকে সফলতার শীর্ষ স্থানে নিজেকে অধিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
স্বাক্ষর
সিলমোহর
আরো পড়ুন: ট্রেড লাইসেন্স করার নিয়ম
চাকরির প্রত্যয়ন পত্র / অফিসিয়াল প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম
চাকরির বা কোম্পানির প্রত্যয়ন পত্র মূলত একই। কোম্পানি থেকে চাকুরিজিবী বা কর্মচারীদের জন্য যে প্রত্যয়ন পত্র প্রদান করা হয় তাকেই কোম্পানির বা চাকরির প্রত্যয়ন পত্র বলে।
চারিত্রিক সনদপত্র
এই মর্মে প্রত্যয়ন করা যাইতেছে যে …………… …………………..…………………………., পিতাঃ ……………………….… , মাতাঃ …………….……..…… , গ্রাম/মহল্লাঃ ………………., ডাকঘরঃ ………………… কোড নংঃ ………………. ওয়ার্ডঃ ………….…., ইউনিয়নঃ …………….., থানাঃ ………….….. উপজেলাঃ ………….., জেলাঃ …………, আমার নিকট সে ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত। আমার জানামতে কোন রাষ্ট্র সমাজ বিরোধী কর্মকান্ডে জড়িত নয়। তার স্বভাব ও চরিত্র ভালো। আমি তাহার সর্বাঙ্গীন উন্নতি ও মঙ্গল কামনা করছি।
তারিখঃ …………………..
স্বাক্ষর
সিলমোহর
জন্ম নিবন্ধন ও ভোটার আইডি কার্ডের প্রত্যয়ন পত্র
প্রত্যয়ন পত্রের জন্য আবেদন লেখার নিয়ম
তারিখ – ১৩/৩/২০২৪
প্রধান শিক্ষক
দুর্গাপুর পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
দুর্গাপুর,রাজশাহী
বিষয়: প্রত্যয়ন পত্রের জন্য আবেদন। মহাশয়, আমার বিনীত নিবেদন এই যে, আমি আপনার বিদ্যালয়ের একজন নিয়মিত ছাত্র। আমার নাম ……………………………………… , আমি নবম শ্রেণীর ………………….বিভাগের ছাত্র। এ বছর জেএসসি পরীক্ষায় আমি এ+ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছি। আমার জেএসসি পরীক্ষার রোল নং……………………………………, রেজিঃ নং ……………………………………………….। দীর্ঘ তিন বছর যাবৎ আমি আপনার বিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করছি। এই তিন বছরে আমি কোনোদিন আইন বিরোধী কাজের সাথে লিপ্ত হইনি। বর্তমানে আমার বাবার চাকরিস্থল পরিবর্তন হওয়ায় আমাকে অন্য একটি বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হচ্ছে। এমতাবস্থায়, আপনার স্বাক্ষরিত একটি প্রত্যয়ন পত্র আমার একান্ত প্রয়োজন।
অতএব মহাশয়,আপনার নিকট বিনীত অনুরোধ, উপরোক্ত কারণ বিবেচনা করে আমাকে একটি প্রত্যয়ন পত্র প্রদানে আপনার একান্ত মর্জি হয়।
বিনীত,
আপনার একান্ত অনুগত
মাসুদ
শ্রেণী – দশম
বিভাগ – খ
রোল – ০৫
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রত্যয়ন পত্রের নমুনা
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর
ঢাকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সন: তারিখ:
প্রত্য্যয়ন পত্র
এই মর্মে প্রত্যয়ন করা যাচ্ছে যে, নাম:……….. , পিতা:……… , মাতা:……….. , গ্রাম:……….. , পোস্ট অফিস:……… , থানা:………. , জেলা:…….. ,জন্ম তারিখ:……….. , কথায়:……….. , রোল নং:……….. । অত্র বিদ্যালয় থেকে ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে ৫ম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত ছিল। ৫ম শ্রেণীতে তার অর্জিত ফলাফল:……….. । প্রাপ্ত গ্রেড: …………। তার শিখন মূল্যায়ন সন্তোষজন। সে পরবর্তী শ্রেণীতে উন্নত হওয়ার যোগ্য।
শ্রেণী শিক্ষকের স্বাক্ষর প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর
প্রত্যয়ন পত্রের ছবি
আমাদের জীবনে নানা কাজে প্রয়োজন পড়ে একটি প্রত্যয়ন পত্রের।যার দ্বারা নির্ভর করে থাকে আমাদের জীবনের অনেক কিছু।তাই আশা করি আজকের আলোচনার মাধ্যমে প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।যার নমুনা কপি আপনাকে ভবিষ্যৎ জীবনে প্রত্যয়ন পত্র লেখতে সাহায্য করবে।
সুপ্রিয় দর্শক আপনাকে স্বাগতম জানাচ্ছি আমাদের দেশের সকলের এই নাগরিক অধিকার রয়েছে এবং এদেশের প্রতি বিশেষ কিছু দায়িত্ব রয়েছে। আর প্রত্যেকটি নাগরিকের প্রয়োজন হয় সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তথ্য যেগুলোর মাধ্যমে মানুষ চাকুরী ব্যবসা বা সম্পত্তি সংক্রান্ত সকল তথ্য প্রয়োজন হয় আমি আপনাদের কাছে উপস্থাপন করব।