সকল এনজিও এবং চাকরির দরখাস্ত লেখার নিয়ম

আমাদের শিক্ষা জীবন থেকে কর্মজীবন সব খানেই প্রয়োজন হয় আবেদনপত্র। বিভিন্ন ধরনের কাজের জন্য, বিভিন্ন চাকরির জন্য আমাদের প্রথমই প্রয়োজন হয় একটি দরখাস্ত । দরখাস্ত লেখার নিয়ম  শিক্ষাজীবন কর্মজীবন পর্যন্ত খুব দরকারী একটি ডকোমেন্ট। দরখাস্ত প্রয়োজন পড়ে  ছোটবেলায় বিদ‌্যালয়ে ছুটির জন্য । পড়াশোনা শেষ করার পর চাকরির দরখাস্ত লেখার প্রয়োজন পড়ে । বাস্তব জীবনেও আবেদন পত্র লেখার প্রয়োজন পড়ে। তাই এটি গুছিয়ে এবং সার্জিত লিখতে জানা অবশ্যক। আজকের এই আলোচনায় আমরা জানবো, কীভাবে আপনি চাকরীর জন্য পারফেক্ট একটি আবেদন পত্র লিখতে পারবেন।

আরো পড়ুন: জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদন এবং ডাউনলোড করার নিয়ম (২০২৫)

চাকরির দরখাস্ত লেখার নিয়ম

১. আপনি আবেনটি যেদিন সাবমিট করবেন, সেদিনের তারিখ লিখুন। বেশিরভাগ চাকরীদাতা তারিখের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখে থাকেন।

২. আবেদনটি কার কাছে লিখছেন? নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখে তা নিশ্চিত হয়ে নিন। চেয়ারম্যন বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা যাই হোক না কেন, তার পদের নাম অবশ্যই সঠিকভাবে লিখবেন।

৩.দরখাস্তের বিষয়বস্তু একটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট।  নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে যে বিষয়বস্তু সেই বিষয়বস্তু নাম উল্লেখ করা থাকে তা দেখে হুবুহু বিষয়বস্তু লিখুন।

৪. আমাদের নিয়ম অনুযায়ি আমরা সাধারণত বিনীত নিবেদন সম্মানপূর্বক নিবেদন যথাযথ সম্মানপূর্বক নিবেদন ইত্যাদি দিয়ে আবেদন শুরু করি। দরখাস্তের মূল অংশ শুরু করার আগে যাকে দরখাস্তের মাধ্যমে আর্জি জানাবেন তাকে সম্মানসূচক সম্বোধন করে লিখবেন।

৫.দরখাস্তের মূল বিষয়বস্তু সংক্ষেপে তুলে ধরতে হবে। এখানে  শব্দ প্রয়োগের বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। কোন তারিখে, কোন পত্রিকায় চাকরির বিজ্ঞপ্তিটি দেখেছেন, তা উল্লেখ করুন। অপ্রয়োজনীয় বিষয়গুলো উপস্থাপন না করে শুধুমাত্র কাজের কথাগুলো লিখুন।

৬.চাকরির আবেদন লেখার এই পর্যায়ে আবেদনকারীর ব্যক্তিগত সকল তথ্য যেমন, নিজের নাম, পিতা এবং মাতার নাম, জন্ম তারিখ, ধর্মীয় পরিচয়,  বৈবাহিক তথ্য, স্থায়ী এবং বর্তমান ঠিকানা, যোগাযোগের জন্য- মোবাইল নাম্বার, ইমেইল নাম্বার ইত্যাদি।

৭.আবদেনপত্রের সাথে অন্য কোন কাগজপত্র যেমন, সনদপত্র, নম্বরপত্র, প্রত্যয়নপত্র, নাগরিকত্বের সদনপত্র ইত্যাদি যুক্ত করলে তা উল্লেখ করুন। দরখাস্তে কোনো কাগজপত্র সংযুক্ত করার থাকলে দরখাস্তের শেষাংশে সংযুক্তি লিখে কাগজপত্রের নাম উল্লেখ করতে হবে। 

৮.আবেদনপত্রের সাথে একটি সিভি যুক্ত করুন। সিভি লেখার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।

চাকরির দরখাস্ত লেখার নমুনা

১.এনজিওর জুনিয়র লোন অফিসার আবেদন

১ জানুয়ারি ২০২৪

বরাবর,

ডিভিশন ম্যানেজার

আশা বিভাগীয় অফিস, রাজশাহী

বিষয়: জুনিয়র লোন অফিসার পদের জন্য আবেদন।

জনাব,

যথাবিহীত সম্মানপূর্বক বিনীত নিবেদন এই যে, গত ১ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে ‘দৈনিক ইত্তেফাক’ পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি মারফত জানতে পারলাম যে, আপনার প্রতিষ্ঠানে জুনিয়র লোন অফিস নিয়োগ করা হবে। উক্ত পদের একজন আগ্রহী প্রার্থী হিসেবে আমার জীবন বৃত্তান্ত ও অন্যান্য তথ্যাবলি নিম্নে লিপিবদ্ধ করা হলো।

১. নাম: মোছা: শাকিলা খাতুন

২. পিতার নাম: মো: শামসুল হক

৩. মাতার নাম: মোছা: রাবেয়া বেগম

৪. স্থায়ী ঠিকানা: গ্রাম: দুর্গাপুর ডাকঘর ও থানা: দুর্গাপুর, জেলা: রাজশাহী

৫. বর্তমান ঠিকানা: দুর্গাপুর ডাকঘর ও থানা: দুর্গাপুর, জেলা: রাজশাহী

৬. জন্ম তারিখ: ২৪ জুন, ১৯৯৬।

৭. জাতীয়তা: বাংলাদেশী।

৮. ধর্ম: ইসলাম।

৯. বৈবাহিক অবস্থা: অবিবাহিত।

১০. শিক্ষাগত যোগ্যতা:

পরীক্ষার নাম গ্রুপ/বিষয় বোর্ড পাশের সন প্রাপ্ত গ্রেড
এসএসসি ব্যবসা রাজশাহী ২০০৯ জিপিএ-৫
এইচএসসি ব্যবসা রাজশাহী ২০১১ জিপিএ-৫
বিবিএ একাউন্টিং রাজশাহী ২০১৫ প্রথম শ্রেণী
এমবিএ একাউন্টিং রাজশাহী ২০১৬ প্রথম শ্রেণী

১১. অভিজ্ঞতা: একটি এনজিও সংস্থায় জুনিয়র লোন অফিসার হিসেবে ৩ বছর কাজের বাস্তব অভিজ্ঞতা।

অতএব, মহোদয় সমীপে বিনীত নিবেদন, উল্লিখিত তথ্য সুবিবেচনাক্রমে আমাকে জুনিয়র লোন অফিসার পদে নিয়োগ দান করে আমার শ্রম ও মেধা প্রয়োগের মাধ্যমে চাকরি করার সুযোগ দানে মর্জি হয়।

নিবেদক

মোছা: শাকিলা খাতুন

দুর্গাপুর,রাজশাহী

সংযুক্তিঃ

 ১. ছবি ২ কপি।

 ২. একডেমিক সকল সনদপত্রের সত্যায়ি কপি।

৩. চারিত্রিক সনদপত্র।

৪. নাগরিকত্ব সনদপত্র।

আরো পড়ুন: প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম

*এনজিওর চাকরির জুনিয়র লোন অফিসার আবেদন ছবি

 

২.এনজিওর সহকারী ম্যানেজার পদের আবেদন

১ জানুয়ারি ২০২৪

বরাবর,

ডিভিশন ম্যানেজার

গ্রামীণ ব্যাংক বিভাগীয় অফিস ,ঢাকা

বিষয়: সহকারী ম্যানেজার পদের জন্য আবেদন।

জনাব,

যথাবিহীত সম্মানপূর্বক বিনীত নিবেদন এই যে, গত ১ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে ‘দৈনিক ইত্তেফাক’ পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি মারফত জানতে পারলাম যে, আপনার প্রতিষ্ঠানে সহকারী ম্যানেজার নিয়োগ করা হবে। উক্ত পদের একজন আগ্রহী প্রার্থী হিসেবে আমার জীবন বৃত্তান্ত ও অন্যান্য তথ্যাবলি নিম্নে লিপিবদ্ধ করা হলো।

১. নাম: মোছা: শাকিলা খাতুন

২. পিতার নাম: মো: শামসুল হক

৩. মাতার নাম: মোছা: রাবেয়া বেগম

৪. স্থায়ী ঠিকানা: গ্রাম: দুর্গাপুর ডাকঘর ও থানা: দুর্গাপুর, জেলা: রাজশাহী

৫. বর্তমান ঠিকানা: দুর্গাপুর ডাকঘর ও থানা: দুর্গাপুর, জেলা: রাজশাহী

৬. জন্ম তারিখ: ২৪ জুন, ১৯৯৬।

৭. জাতীয়তা: বাংলাদেশী।

৮. ধর্ম: ইসলাম।

৯. বৈবাহিক অবস্থা: অবিবাহিত।

১০. শিক্ষাগত যোগ্যতা:

পরীক্ষার নাম গ্রুপ/বিষয় বোর্ড পাশের সন প্রাপ্ত গ্রেড
এসএসসি ব্যবসা রাজশাহী ২০০৯ জিপিএ-৫
এইচএসসি ব্যবসা রাজশাহী ২০১১ জিপিএ-৫
বিবিএ একাউন্টিং রাজশাহী ২০১৫ প্রথম শ্রেণী
এমবিএ একাউন্টিং রাজশাহী ২০১৬ প্রথম শ্রেণী

 

১১. অভিজ্ঞতা: একটি এনজিও সংস্থায় জুনিয়র লোন অফিসার হিসেবে ৩ বছর কাজের বাস্তব অভিজ্ঞতা।

অতএব, মহোদয় সমীপে বিনীত নিবেদন, উল্লিখিত তথ্য সুবিবেচনাক্রমে আমাকে সহকারী ম্যানেজার  পদে নিয়োগ দান করে আমার শ্রম ও মেধা প্রয়োগের মাধ্যমে চাকরি করার সুযোগ দানে মর্জি হয়।

নিবেদক

মোছা: শাকিলা খাতুন

দুর্গাপুর,রাজশাহী

সংযুক্তিঃ

 ১. ছবি ২ কপি।

 ২. একডেমিক সকল সনদপত্রের সত্যায়ি কপি।

৩. চারিত্রিক সনদপত্র।

৪. নাগরিকত্ব সনদপত্র।

আরো পড়ুন: অঙ্গীকারনামা লেখার নিয়ম

*এনজিওর চাকরির সহকারী ম্যানেজার পদের জন্য আবেদন ছবি

 

৩. এনজিওর ট্রেইনি অফিসার পদের আবেদন

১ জানুয়ারি ২০২৪

বরাবর,

ডিভিশন ম্যানেজার

ব্রাক বিভাগীয় অফিস, রাজশাহী

বিষয়: ট্রেইনি অফিসার পদের জন্য আবেদন।

জনাব,

যথাবিহীত সম্মানপূর্বক বিনীত নিবেদন এই যে, গত ১ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে ‘দৈনিক ইত্তেফাক’ পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি মারফত জানতে পারলাম যে, আপনার প্রতিষ্ঠানে ট্রেইনি অফিসার পদে নিয়োগ করা হবে। উক্ত পদের একজন আগ্রহী প্রার্থী হিসেবে আমার জীবন বৃত্তান্ত ও অন্যান্য তথ্যাবলি নিম্নে লিপিবদ্ধ করা হলো।

১. নাম: মোছা: শাকিলা খাতুন

২. পিতার নাম: মো: শামসুল হক

৩. মাতার নাম: মোছা: রাবেয়া বেগম

৪. স্থায়ী ঠিকানা: গ্রাম: দুর্গাপুর ডাকঘর ও থানা: দুর্গাপুর, জেলা: রাজশাহী

৫. বর্তমান ঠিকানা: দুর্গাপুর ডাকঘর ও থানা: দুর্গাপুর, জেলা: রাজশাহী

৬. জন্ম তারিখ: ২৪ জুন, ১৯৯৬।

৭. জাতীয়তা: বাংলাদেশী।

৮. ধর্ম: ইসলাম।

৯. বৈবাহিক অবস্থা: অবিবাহিত।

১০. শিক্ষাগত যোগ্যতা:

পরীক্ষার নাম গ্রুপ/বিষয় বোর্ড পাশের সন প্রাপ্ত গ্রেড
এসএসসি ব্যবসা রাজশাহী ২০০৯ জিপিএ-৫
এইচএসসি ব্যবসা রাজশাহী ২০১১ জিপিএ-৫
বিবিএ একাউন্টিং রাজশাহী ২০১৫ প্রথম শ্রেণী
এমবিএ একাউন্টিং রাজশাহী ২০১৬ প্রথম শ্রেণী

১১. অভিজ্ঞতা: একটি এনজিও সংস্থায় জুনিয়র লোন অফিসার হিসেবে ৩ বছর কাজের বাস্তব অভিজ্ঞতা।

অতএব, মহোদয় সমীপে আকুল আবেদন আমার শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অবিজ্ঞতা বিবেচনাপূর্বক আমাকে ট্রেইনি অফিসার পদে নিয়োগ প্রদান করে বাধিত কররেন।

নিবেদক

মোছা: শাকিলা খাতুন

দুর্গাপুর,রাজশাহী

সংযুক্তিঃ

 ১. ছবি ২ কপি।

 ২. একডেমিক সকল সনদপত্রের সত্যায়ি কপি।

৩. চারিত্রিক সনদপত্র।

৪. নাগরিকত্ব সনদপত্র।

আরো পড়ুন: অঙ্গীকারনামা লেখার নিয়ম

*এনজিওর চাকরির ট্রেইনি অফিসার পদের জন্য আবেদন ছবি

আজকের এই পোস্টে আমি আপনাদের সাথে চাকরির দরখাস্ত লেখার নিয়ম  জানাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আশা করছি আজকের আর্টিকেলে সে সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দিতে পেরেছি। এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকলে তা কমেন্ট করে জানাতে পারেন।

1 thought on “সকল এনজিও এবং চাকরির দরখাস্ত লেখার নিয়ম”

  1. কোভার লেটার/ এপ্লিকেশন আর সিভি আলাদা করে দিলে কি গ্রহণযোগ্য হবে না??

    Reply

Leave a Comment