আকিকার নিয়ম এবং আকিকার পশুর ধরন ও গোশতের বিধান

আকিকার দেওয়া প্রত্যেক বাবা ও মায়ের জন্য সুন্নাত। যদি সন্তানের আকিকার দেওয়ার সামর্থ্য বাবা মায়ের থাকে সেই ক্ষেত্রে অবশ্য আকিকার করতে হবে। আর আকিকারের পশু কোন আলেম বা মাওলানাকে জবাই করতে না দিয়ে, নিজে জবাই করা উত্তম। তাই নিজেরা আকিকার করার চেষ্টা করুণ। 

আকিকা দিবেন তা আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী যদি সন্তানের আকিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে সাত দিনের ভেতরে এই কাজটি সম্পন্ন করেন এবং প্রত্যেকটি নিয়ম-কানুন অনুসরণ করে করেন তাহলে দেখা যাবে যে সেটা আপনার সন্তানের জন্য কল্যাণ করা হবে। সাত দিনের ভেতরে যে আকিকা দিবেন সেটা হবে সুন্নত পালন করা এবং পরবর্তীতে আপনারা যেটা দিবেন অথবা আর্থিক সমস্যার কারণে পরবর্তীতে যদি আকিকা দিয়ে থাকেন তাহলে সেটাও বৈধ হবে। তবে আকিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে চেষ্টা করবেন সন্তান জন্মগ্রহণ করার সাত দিনের ভেতরে দেওয়ার।দের সামর্থ্য অনুযায়ী যদি সন্তানের আকিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে সাত দিনের ভেতরে এই কাজটি সম্পন্ন করেন এবং প্রত্যেকটি নিয়ম-কানুন অনুসরণ করে করেন তাহলে দেখা যাবে যে সেটা আপনার সন্তানের জন্য কল্যাণ করা হবে। সাত দিনের ভেতরে যে আকিকা দিবেন সেটা হবে সুন্নত পালন করা এবং পরবর্তীতে আপনারা যেটা দিবেন অথবা আর্থিক সমস্যার কারণে পরবর্তীতে যদি আকিকা দিয়ে থাকেন তাহলে সেটাও বৈধ হবে। তবে আকিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে চেষ্টা করবেন সন্তান জন্মগ্রহণ করার সাত দিনের ভেতরে দেওয়ার।

আকিকা কি

সন্তান জন্মের কৃতজ্ঞতাস্বরূপ আল্লাহর নামে পশু কোরবানি করাকে শরিয়তে আকিকা বলে। সন্তানের জন্মগ্রহণ পিতা-মাতার জন্য চরম আনন্দের। এজন্যই শরিয়ত এ নিয়ামতের কৃতজ্ঞতাস্বরূপ আকিকার নির্দেশ করেছে। মহান আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করতে বলেছে। বাচ্চার আকিকা না করা হলে বাচ্চা বিপদ-আপদে জর্জরিত থাকে। আকিকা হয় তার ফিদিয়া বা বিনিময়। এর দ্বারা বাচ্চার বিপদ-আপদ দূর হয়।

আকিকা করার নিয়ম

সন্তান জন্মগ্রহণ করার পর সপ্তম দিনে আকিকা করতে হয় ‌। সেই সপ্তম দিনে সন্তানের মাথার চুল মুন্ডন করে তার সমমূল্যের টাকা দান করতে হয় । এ সম্পর্কে দুটি হাদীস দেখুন । হযরত যাফর বিন মুহাম্মদ তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে, তার পিতা বলেছেন হযরত ফাতেমা বিনতে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত হাসান , হযরত হুসাইন , হযরত জয়নব ও হযরত উম্মে কুলসুমের চুল ওজন করে সেই পরিমাণ রুপা সদকা করে দিয়েছেন । ( মুয়াত্তা মালিক, হাদীস নং-১৮৩৯, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৮২৬২, সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-১৯০৭৯)

সপ্তম দিনে আকিকা করতে না পারলে ১৪তম দিনে আকিকা করবেন । না পারলে ২১ তম দিনে করবেন ।

যদি তাও না পারা যায় তাহলে সন্তান বালেগ হওয়ার আগ পর্যন্ত যেকোনো দিন করতে পারবেন । তবে এক্ষেত্রে সন্তান জন্ম নেওয়ার পর থেকে সপ্তম দিন গণনা করে সপ্তম দিনের দিন আকিকা দেওয়াটাই উত্তম বলে ফুক্বাহায়ে কেরাম মত দিয়েছেন ।

হযরত উম্মে করজ বলেন আব্দুর রহমান বিন আবী বকরের পরিবারে এক মহিলা বলেন , আব্দুর রহমানের স্ত্রী ছেলে সন্তান প্রসব করে । তখন আমরা তার পক্ষ থেকে একটি ভেড়া জবাই করেছি । তখন হযরত আয়েশা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহা বললেন এমনটি- বরং পদ্ধতি হলো ছেলের পক্ষ থেকে দুটি সমান পর্যায়ের বকরি আর মেয়ের পক্ষ থেকে একটি বকরি দিয়ে আকিকা করবে ‌।

তারপর এটিকে রান্না করবে । তবে এর হাড্ডিকে ভাংবে না । তারপর তা নিজে খাবে । অন্যকে খাওয়াবে এবং দান করবে ‌।‌

আকিকার দোয়া

اللهم هذه عقيقة فلان……… دمها بدمه ولحمها بلحمه وعظمها بعظمه وجلدها بجلده وشعرها بشعره ….

اَللَّهُمَّ إِنِّي وَجَّهْتُ وَجْهِيَ لِلَّذِي فَطَرَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْض حَنِيفًا وَمَا أَنَا مِنَ الْمُشْرِكِينَ – إِنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ – لَا شَرِيكَ لَهُ وَبِذَٰلِكَ أُمِرْتُ وَأَنَا اول مِنَ الْمُسْلِمِينَ – بِسْمِ اللهِ اَللهُ اكبر –

বাংলা উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা হাজিহি আকিকাতু ফুলানি ( এই স্থলে ছেলে বা কন্যার নাম উল্লেখ করবেন ) দামুহা বিদামিহি, ওয়া লাহমুহা বিলাহমিহি ,ওয়া আজমুহা বি আজমিহি ,ওয়া জিলদুহা বিজিলদিহি ,ওয়া শায়রুহা বি শায়রিহি ,

ইন্নি ওয়াঝঝাহতু ওয়াঝহিয়া লিল্লাজি ফাতারাস সামাওয়াতি ওয়াল আরদা হানিফা ওমা আনা মিনাল মুশরিকিন । ইন্না সালাতি ওয়া নুসুকি ওয়া মাহইয়ায়া ওয়া মামাতি লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন । লা শারিকালাহু ওয়া বি জালিকা উমিরতু ওয়া আনা আউয়ালু মিনাল মুসলিমিন । বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার ।

উল্লেখিত দোয়াটি না পারলেও সমস্যা নেই । কার জন্য আকিকা করা হচ্ছে তার খেয়াল অন্তরে রেখে এ দোয়াটি পড়ে জবাই করলেও হবে ।

আকিকার পশুর ধরন ও গোশতের বিধান

কোরবানির  পশু জবাই করা যায় আকিকায়ও সেসব পশু জবাই করা যায়। অর্থাৎ উট, গাভী, মহিষ, বকরি, ভেড়া ও দুম্বা। তাই কোরবানি চলে এমন পশুই আকিকার জন্য নির্বাচন করতে হবে। আকিকার গোশতের বিধানও কোরবানির মতোই। কাঁচা গোশতও বিতরণ করা যায় আবার রান্না করে দাওয়াত করেও খাওয়ানো যায়। আকিকার গোশত নিজে এবং মা-বাবা, দাদা-দাদি এবং নানা-নানিসহ সবাই খেতে পারবে। ধনী আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশিকে হাদিয়া দিতে পারবে এবং গরিব-অসহায়দের সদকা করতে পারবে। সব গোশত নিজের জন্য রেখে দেওয়াও জায়েজ। (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক  ৭৯৬৭)

তাহনীক অর্থ খেজুর বা মিষ্টি জাতীয় কিছু চিবিয়ে বাচ্চার মুখে দেওয়া; হিজরতের পর মদিনায় জন্মগ্রহণকারী প্রথম মুহাজির সন্তান আব্দুল্লাহ ইবনে যুবায়েরকে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) খেজুর চিবিয়ে তার মুখে দিয়ে তাহনীক’ করেছিলেন; এভাবে তিনিই ছিলেন প্রথম সৌভাগ্যবান শিশু যার পেটে প্রথম রাসূলের পবিত্র মুখের লালা প্রবেশ করে; পরবর্তী জীবনে তিনি উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তি হিসেবে প্রসিদ্ধি লাভ করেছিলেন; আনসারগণ তাদের নবজাতক সন্তানদের রাসূলের কাছে এনে ‘তাহনীক’ করাতেন; আবু তালহা (রাঃ) তার সদ্যজাত পুত্রকে নিয়ে রাসূলের কোলে দিলে তিনি খেজুর তলব করেন; অতঃপর তিনি তা চিবিয়ে বাচ্চার গালে দেন ও নাম রাখেন ‘আব্দুল্লাহ’

আজকের এই পোস্টে আমি আপনাদের সাথে আকিকার নিয়ম ও দোয়া জানাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আশা করছি আজকের আর্টিকেলে সে সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দিতে পেরেছি। এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকলে তা কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আপনি গরু দিয়ে আকিকা দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন আমাদের এই পৌষ্টের মাধ্যমে…

Leave a Comment