বাংলাদেশের মানুষের আতঙ্কের আরেক নাম জেটি এখন সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে সকল জায়গায় মানুষের কাছে খুবই ভয়ানক একটি সাপ সেটি হল রাসেল ভাইপার। রাসেল ভাইপার সাধারণত মরুভূমির সাপ কিন্তু কয়েক বছর হল আমাদের বাংলাদেশে এই সাপের আবির্ভাব রয়েছে আর এখন এই সাপের বিস্তার ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে আর এটি এমন একটি বিষধর সাপ যা মানুষকে মৃত্যুর দিকে ধাবিত করে। এখন রাসেল ভাইয়ের সব আমাদের দেশের অনেক জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে এবং এটি অনেক বিষধর হওয়ার কারণে মানুষ অনেক আতঙ্কের ভিতরে রয়েছে তাই আজকে আপনাদের সাথে আলোচনা করব রাসেল ভাইপার সাথে সম্পর্কে বিস্তারিত-
রাসেল ভাইপার সাপ কি
বাংলাদেশের বেশ কিছু জেলায় রাসেল’স ভাইপার সাপ নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ফেসবুকে বিষয়টি নিয়ে অনেকে নানাভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছেন প্রায় ৪০০০ এর বেশি সর্প দংশনের রোগীর চিকিৎসা দেওয়া ডা. ফরহাদ উদ্দীন হাসান চৌধুরী। অনেকে প্রচার করছেন যে সাপটি কামড় দিলে দ্রুত মানুষের মৃত্যু হয়। রাসেল ভাইপার সাপ বাংলাদেশে চন্দ্রবোড়া বা উলুবোড়া নামেও পরিচিত। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন সাধারণ মানুষ। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এই সাপটি নিয়ে যে মাত্রায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে তা কতটা যৌক্তিক?
চন্দ্রবোড়া রাসেল ভাইপার সাপ
বাংলাদেশের প্রধান টি বিষাক্ত সাপ হলো গোখরা (কোবরা), কেউটে (ক্রেইট) এবং রাসেলস ভাইপার বা চন্দ্রবোড়া। ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম বিষধর সাপ এবং উপমহাদেশের প্রধান চারটি বিষধর সাপের একটি। চন্দ্রবোড়া ১৭৯৭ সালে জর্জ শ এবং ফ্রেডেরিক পলিডোর নোডার কর্তৃক বর্ণিত হয়। প্যাট্রিক রাসেল ১৭৯৬ সালে তার অ্যান অ্যাকাউন্ট অফ ইন্ডিয়ান সারপেন্টস, কালেক্টেড অন দা কোস্ট অফ করোমান্ডেল বইয়ে চন্দ্রবোড়া সম্পর্কে লিখেছিলেন ও তার নাম অনুসারে এটি রাসেল ভাইপার। চন্দ্রবোড়া এই সাপের দংশনে ২ ঘন্টার মধ্যে এন্টিভেনোম দিতে না পারলে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু নিশ্চিত।
রাসেল ভাইপার বা শংখচুড় সাপ
শঙ্খচূড় এলাপিডি পরিবারভুক্ত একটি সাপ। ইউরোপ ও এন্টার্কটিকা ব্যতীত এই পরিবারে সারা পৃথিবীতে প্রায় ২০০-এর বেশি প্রজাতি দেখা যায়। শঙ্খচূড় ভারত উপমহাদেশের দক্ষিণপূর্ব এশিয়া ও পূর্ব এশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে বিশেষ করে বাংলাদেশ, ভুটান, মায়ানমার(বার্মা), কম্বোডিয়া, চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, নেপাল, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামে বেশি পরিমাণে দেখা যায় । বাংলাদেশ হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান। বনের ভেতর একটি পুকুরের পাশে ঢোঁড়া সাপকে খাওয়ার জন্য বড় একটি সাপ আসছিল।
রাসেল ভাইপার কামড়ালে কি হয়
গবেষক মোঃ গোলাম রাব্বানী বলছেন রাসেল ভাইপার কামড় দিলেই রোগী মারা যায় এটিও সত্য নয়, বরং রোগী সহজে মারা যায় না। ন্যূনতম ৭২ ঘণ্টার আগে সহজে রোগী মারা যায় না। বাংলাদেশে এ সাপের কামড়ের পর ১৫ দিন পর্যন্ত বেঁচে ছিলো এমন তথ্যও আছে। বাংলাদেশ টক্সিকোলজি সোসাইটির সভাপতি ডাঃ মোঃ আবুল ফয়েজ সাপের দংশন ও এর চিকিৎসা নিয়ে বই লিখেছেন। বিষের বিরুদ্ধে কার্যকর বা বিষ নিষ্ক্রিয় করতে পারে এমন উপাদানকে অ্যান্টিভেনম বলা হয়। এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, সারাদেশে পর্যাপ্ত পরিমাণ বিষ প্রতিষেধক বা অ্যান্টিভেনম সাপ কামড়ালে রোগীর শরীরে প্রয়োগ করা হয় আছে।
রাসেল ভাইপারের এন্টিভেনম
বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় চার লাখ মানুষ সাপের কামড়ের শিকার হয়, যার ফলে সাড়ে সাত হাজারেরও বেশি মানুষ মারা যায়। যে কোনো বিষধর সাপ কাটার পর অ্যান্টিভেনম প্রয়োগ জরুরি হয়ে যায়। অন্যথায় রোগীর মৃত্যু ঝুঁকি বেশি। রোগীর শরীরে অ্যান্টিভেনম প্রয়োগ সবচেয়ে জরুরি হলেও বাংলাদেশের হাসপাতালগুলোতে এখনও অত্যাবশ্যকীয় এই ওষুধ পর্যাপ্ত পরিমাণে নেই। তিনি বলেন, ওঝার কাছে না গিয়ে যত দ্রুত সম্ভব নিকটস্থ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, জেলা সদর হাসপাতাল বা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শে নির্দিষ্ট অ্যান্টিভেনম প্রয়োগ করতে হবে।
রাসেল ভাইপার সাপের ছবি
রাসেল ভাইপার সাপের ভিডিও
সুপ্রিয় দর্শক আপনাকে স্বাগতম জানাচ্ছি আপনারা যারা বিভিন্ন সমস্যা নিরাময় করার জন্য বিভিন্ন বড় বড় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলো এবং বড় বড় ডাক্তারদের পরামর্শ গ্রহণ করতে চাচ্ছেন তাদের জন্য সকল ডাক্তারের পরামর্শ ও মতামত এবং সময় চিকিৎসা বিষয়ে সকল তথ্য সংগ্রহ করে আপনাদের কাছে আমি উপস্থাপন করব।