মানবদেহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো রক্ত। মানবদেহে শতকরা ৮ ভাগ রক্ত থাকে এবং গড়ে মানবদেহে ৫-৬ লিটার রক্ত থাকে। রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় কম থাকলে তাকে রক্তস্বল্পতা বা রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। হিমোগ্লোবিনের কাজ হল দেহের প্রতিটি অংশে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন রক্তের মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া হলো রক্ত। দেহের জ্বালানি স্বরূপ রক্ত দেহের সকল অংশে অক্সিজেন এবং সব ধরনের পুষ্টি উপাদান বয়ে নিয়ে যায়। রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে গেলে অ্যানিমিয়াসহ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা যেমন মাথা ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, দুর্বলতা, ক্ষুধামন্দা ইত্যাদি দেখা দিতে পারে। রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমান বাড়ায় এমন ১০ টি খাবার সম্পর্কে জেনে নিন-
মাংস;
রক্তে আমাদের দ্রুত হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়াতে পারে প্রাণিজ প্রোটিন। সকল ধরনের লাল মাংস যেমনঃ গরুর মাংস , খাসির মাংস খেতে হবে। তাই রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়াতে নিয়মিত গরুর মাংস, খাসির মাংস এবং কলিজা খেতে পারেন। মুরগির মাংস লাল মাংস না হলেও তাও দেহকে বিশাল পরিমাণে আয়রন সরবরাহ করতে পারে। অন্য কোনো সমস্যার কারণে আগে থেকে এ ধরনের খাবার নিষেধ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খেতে পারেন।
ডিম;
ডিম আমাদের আরেকটি জনপ্রিয় খাদ্য যাতে আছে উচ্চমাত্রার আয়রন এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান। ডিমের মধ্যে রয়েছে প্রোটিন ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রক্তস্বল্পতা কমিয়ে শরীরে রক্তের পরিমাণ বাড়াতে ডিম খুব উপকারী। ডিম রয়েছে উচ্চ মাত্রায় আয়রন ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান ডিমের হলুদ কুসুমে আছে প্রচুর পরিমানে খনিজ পুষ্টি এবং ভিটামিন। শরীরের দুর্বলতা কারণেই দুর্বল লোকদেরকে প্রতিদিন সেদ্ধ ডিম খেতে বলা হয়।
সবজি;
আমাদের প্রতিদিন তাজা সবজি খেলে আয়রন ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান এবং নানা ধরনের ভিটামিনের ঘাটতি মিলবে। বিভিন্ন রকম সবজি, যেমন কচু শাক, কচুর লতি, কচু, পালং শাক, বিট, লেটুস, ব্রকোলি, ধনিয়া পাতা এবং পুদিনা পাতা নিয়মিত খেলে রক্তশূন্যতা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। টম্যাটো, কুমড়ো, ব্রকোলি বা পালং শাকে প্রচুর আয়রন থেকে। এ সবজি গুলি খেলেও রক্তাল্পতার সমস্যা কমতে পারে।
শস্যজাতীয় খাদ্য;
রক্ত শূণ্যতায় আক্রন্ত রোগীদের জন্য খুবই উপকারি খাবার চাল, গম, বার্লি এগুলো খাবার প্রয়োজনীয় কার্বো-হাইড্রেড সরবরাহ করে থাকে। ছোলায় আছে প্রচুর আয়রন ও প্রোটিন ভিটামিন, মিনারেলে ভরা ছোলা পরিপাকে সাহায্য করে। কারণ এসব খাবার আয়রন সমৃদ্ধ সেইসঙ্গে এসবে থাকে পর্যাপ্ত কার্বোহাইড্রেটসও আয়রনের একটি সমৃদ্ধ উৎস বলে গণ্য হয়।
সামুদ্রিক মাছ;
সামুদ্রিক মাছ আয়রন এবং অন্যান্য খনিজ পুষ্টি উপাদান আছে প্রচুর পরিমাণে। তাছাড়া ছোট মাছ যেমন শিং মাছ, টেংরা মাছ ইত্যাদি সব মাছেই রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতার রোগীদের প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় স্টার, গ্লামস এবং অন্যান্য সামুদ্রিক খাদ্য রাখতে হবে। রক্তস্বল্পতা রোগ থেকে দেহকে মুক্ত রাখতে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় মাছ রাখুন। সয়াবিন বর্তমানে রোগীদের জনপ্রিয় একটি খাবার। এ থেকে সুস্বাদু সব খাবার তৈরি হয় এবং রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রাও বাড়ায়।
বাদাম;
যেকোন ধরনের বাদাম এই মানব দেহের জন্য উপকারি। যে কারণে আমাদের কাজু বাদাম, হিজলি বাদাম, চীনা বাদাম এবং আখরোট খেলে রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়ে দ্রুতগতিতে। বাদামে প্রচুর পরিমাণে আয়রন তাই রক্ত স্বল্পতা দূর করতে ডায়েটে প্রচুর পরিমাণে বাদাম রাখুন। বাদাম রক্তে হিমগ্লোরোবিনের মাত্রা বাড়ে।
ফল;
যেমন লেবু, কমলা, আম ইত্যাদি ফলে ভিটামিন সি থাকে আমাদের শরীরে আয়রন দ্রুত শোষণ করার জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ভিটামিন সি। আমরা প্রতিদিন আয়রনযুক্ত ফল যেমন আপেল, টমেটো, বেদানা, কলা, আঙ্গুর, কমলা, গাজর ইত্যাদি খেলে রক্তশূন্যতা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
ডার্ক চকোলেট;
হিমোগ্লোবিনের ঘাটতি কমানোর ক্ষেত্রে ডার্ক চকোলেট দারুণ কাজ করে। শিশুদের প্রিয় খাবার ডার্ক চকোলেটেও থাকে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। এমন কি ডাক্তারাও ডার্ক চকলেট খেতে বলে। ৩ আউন্স ডার্ক চকোলেটে আছে ৭ মিলিগ্রাম আয়রন তাই পরিমিত ডার্ক চকোলেট রাখুন।
আজকের এই পোস্টে আমি আপনাদের সাথে শরীরে রক্ত বৃদ্ধির উপায় জানাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আশা করছি আজকের আর্টিকেলে সে সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দিতে পেরেছি। এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকলে তা কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আপনি লো প্রেসার হাই করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন আমাদের এই পৌষ্টের মাধ্যমে….
সুপ্রিয় দর্শক আপনাকে স্বাগতম জানাচ্ছি আপনারা যারা বিভিন্ন সমস্যা নিরাময় করার জন্য বিভিন্ন বড় বড় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলো এবং বড় বড় ডাক্তারদের পরামর্শ গ্রহণ করতে চাচ্ছেন তাদের জন্য সকল ডাক্তারের পরামর্শ ও মতামত এবং সময় চিকিৎসা বিষয়ে সকল তথ্য সংগ্রহ করে আপনাদের কাছে আমি উপস্থাপন করব।